চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

করোনায় বড় ধাক্কা পুঁজিবাজারে, শেয়ার ধরে রাখার পরামর্শ

গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে সূচক

আবারও ভয়াবহ পতন পুঁজিবাজারে। সোমবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯৯ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। যার ফলে এক দিনেই সূচক কমেছে ২৭৯ পয়েন্ট বা ৬ শতাংশ। ৪ হাজার ৮ পয়েন্ট নিয়ে গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে সূচক।

বাজার সংশ্লিষ্টদের ধারণা, পুঁজিবাজারে করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণের আতঙ্কে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। ফলে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।

এ দিন বাজারে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও ছিল না। ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি বেড়ে গেছে। তাই বাধাহীনভাবেই শেয়ারের দাম কমে গেছে বলে মনে করেন তারা।

তবে আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি না করারও পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক রয়েছে। তাছাড়া আমদানি-রপ্তানিও কমে গেছে। ফলে বাজারে মারাত্মকভাবে তার প্রভাব পড়ছে।

‘‘অন্য দেশগুলোও এই ভীতি রয়েছে। যেমন, পাকিস্তানে কয়েকদিন থেকেই পুঁজিবাজার বন্ধ। মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে সোমবার সূচক কমেছে ১৩শ পয়েন্ট।’’

আজকে বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেন ছিল না উল্লেখ করে আবু আহমেদ বলেন, ‘সরকার  রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগ করার জন্য বলা হলেও তারা তা করছে না। এ কারণে বাজারে আস্থাহীনতায় ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বাজার অস্থিরতায় রয়েছে।’

এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি না করার পরামর্শ দিয়ে এ পুঁজিবাজার বিশ্লেষক বলেন, ‘এমন ভয় থাকবেই। কিন্তু তাই বলে হুমড়ি খেয়ে শেয়ার বিক্রি করতে হবে কেন? ভাল কোম্পানিগুলো ভাল লভ্যাংশ দিচ্ছে। তাই শেয়ার ধরে রাখুন।’

তবে বাজার চাঙ্গা করতে প্রতিষ্ঠিত ভাল কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশির ভাগ শেয়ারের দর পতন হওয়ায় মূল্যসূচকে এর তীব্র প্রভাব পড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে গেছে। সূচক ২৭৯ দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এতে সূচক ভিত্তি পয়েন্টের নিচে অবস্থান করছে। যা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ডিএসইএক্স ও ডিএস৩০ সূচক চালু হয়। ওই সময় ডিএসইএক্স সূচকের ভিত্তি পয়েন্ট ছিল ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট। আর ডিএস৩০ ছিল এক হাজার ৪৬০ পয়েন্ট।ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ৬৯ পয়েন্ট, আর ডিএসই শরীয়াহ সূচক কমেছে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বা ৮৮ পয়েন্ট।

ডিএসইতে আজ ৪৯৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত কার্যদিবস (রোববার) থেকে ৭০ কোটি ৪২ লাখ টাকা বেশি। গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

আজ ডিএসইতে ৩৫৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২টির, কমেছে  ৩৫২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির।

যে দুটি কোম্পানির দর বেড়েছে, সেগুলো হলো এপিএসসিএল নন কনভারটেবল অ্যান্ড ফুললি রিডেমেবল কুপন বিয়ারিং বন্ড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই  ৭৬৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে।

সিএসইতে হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর কমেছে ২৪৯টির, বেড়েছে ৩টির, অপরিবর্তিত আছে ৪টির দর।

এদিন সিএসইতে টাকার অংকে ৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।