করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পৃথিবীজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হজ ওমরাহ ট্রাভেল ট্যুরিজম সেক্টর।
বাংলাদেশ থেকে পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালন করার জন্য বাংলাদেশের ১,২৩৮টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে কমপক্ষে ৪ লক্ষ বাংলাদেশি মক্কা মদিনা সফর করে থাকেন।
পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের এই ট্রাভেল এজেন্সিগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসব বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর সহযোগিতায় বিগত কয়েক বছর হজ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি সাধিত করার পাশাপাশি প্রশংসিত হয়েছে সৌদি আরবে।
কিন্তু সম্প্রতি মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (হাব)। শীঘ্রই করোনাভাইরাস সমস্যার সমাধান এবং এবছর পবিত্র হজ পালিত না হলে হজ ওমরাহ ও ট্যুরিজম সম্মুখীন হবে মহাসঙ্কটের।
অনাকাঙ্খিত এসব সংকট মোকাবেলায় হজ ও ওমরাহ এজেন্সিগুলোর জন্য নগদ প্রণোদনা ও সুদবিহীন ১৫০০ কোটি টাকা ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণের ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চারটি প্রস্তাবনায় রয়েছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত করোনা সংকট মোকাবেলায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা থেকে হজ ও ওমরাহ এজেন্সি সমূহের ইতিমধ্যে ঘটে যাওয়া ক্ষতিপূরণের জন্য নগদ প্রণোদনা। ১৫শ কোটি টাকা সুদ মুক্ত ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণের ব্যবস্থা করণ। ট্রাভেল এজেন্ট অপারেটরদের জন্য প্রয়োজনীয় নগদ প্রণোদনা ব্যবস্থা করা। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ১ এর আওতায় ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটরদের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ প্রদানের ব্যবস্থাকরণ।
চ্যানেল আই অনলাইন কে হাব সভাপতি বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকার ওমরাহ বন্ধ ঘোষণার পর ১০ হাজার ওমরাহ যাত্রীর ভিসা এয়ার টিকেট, মক্কা মদিনায় হোটেল ভাড়াসহ পূর্ণ প্যাকেজের মূল্য পরিশোধ করা এছাড়া রমজান মাসে ওমরাহ হজের জন্য আরও পাঁচ হাজার এয়ারটিকেট অগ্রিম ক্রয় করেছিল এজেন্সিগুলো যার সর্বসাকুল্যে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা নগদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া রমজান মাস পর্যন্ত এক লক্ষ ওমরাহ হজ যাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছিল এক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এবছর বেসরকারিভাবে ১ লক্ষ ২০ হাজার হজযাত্রীর হজ পালন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এসব এজেন্সিগুলো।
যদি কেনো কারণে ২০২০ সালের পবিত্র হজ পালিত না হয় এবং বাংলাদেশের হজ যাত্রীগণ এবছর হজে না যেতে পারে তাহলে এবার এজেন্সিগুলো আরো ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হবে। এজেন্সিগুলো আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এ সেক্টরের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক প্রণোদনা একান্তই প্রয়োজন।
হজ, ওমরাহ ও ট্যুরিজম সেক্টরকে বাঁচিয়ে রাখতে এই মুহূর্তে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।