টমেটো চাষ করে লাখ লাখ টাকা লোকসানের মুখে পড়েছেন দিনাজপুরের কৃষকরা। গত বছর এই সময়ে টমেটো ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা মন দরে বিক্রি করলেও এবার তা বিক্রি করতে হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা মণ দরে। অথচ উৎপাদন খরচ পড়েছে প্রতিমণ সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
এমনটাই জানিয়েছেন বিরল উপজেলার কৃষক মো. মতিউর রহমান।
ফেব্রয়ারির শুরুতে কৃষক নাবি জাতের টমেটো আবাদ শুরু করে এবং ক্ষেত থেকে তা তোলা শুরু হয় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু এ বছর ভালো ফলন পেলেও করোনাভাইরাসের কারণে উৎপাদিত টমেটো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
দেশের রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক মো. মতিউর রহমান জানিয়েছেন,গ্রীষ্মকালীন এই নাবি জাতের টমেটো ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ। দিনাজপুরে এসে ভীড় করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকার ও ব্যবসায়ীরা। তাই তিনিও এবার ২০ একর জমিতে এই জাতের টমেটো চাষ করেছেন। ফলনও পেয়েছেন ভালো। কিন্তু ফলন ভালো পেলেও লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে তাকে।
শুধু তিনি নন, করোনার কারণে বাইরের পাইকাররা না আসায় এবং টমেটো বাজারজাত করতে না পারায় কৃষক বিপাকে পড়েছেন। টমেটো তুলে বিক্রি করার পর মজুরী খরচ না পাওয়ায় কৃষক টমেটো তোলা ছেড়ে দিয়েছে। তাই ক্ষেতের টমেটো এখন ক্ষেতেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে করোনার কারণে কৃষি শ্রমিক সংকট চলছে। অনেক কৃষি শ্রমিক ভয়ে কাজে যোগ না দিলেও যারা নিরুপায় হয়ে কাজে বেরুচ্ছেন তারা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক ফসলের দাম না পাওয়ায়। এমনটাই অভিযোগ কৃষি শ্রমিকের।
এ টমেটো চাষে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। কিন্তু এ বছর ভালো ফলন পেয়েও করোনাভাইনাসের কারণে টমেটো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক, এমনটা স্বীকার করছেন কৃষি বিভাগ।
তাই করোনায় ত্রাণ সাহায্য কার্যক্রমে এই টমেটো তালিকাভুক্ত করার আহবান জানিয়েছেন দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল।