মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের মুখে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরাতে ৩০ সদস্যের একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে দুই দেশ।মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্তে খুব দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, যে অ্যারেঞ্জমেন্টে আমরা উভয়পক্ষ সই করেছিলাম সেখানেই এ ওয়ার্কিং গ্রুপের কথা ছিল। এখন পরবর্তী ধাপের কাজ শুরু হবে। তবে ঠিক কবে নাগাদ বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে- সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শুধু বলেছেন, ‘কবে নাগাদ শুরু হবে এখনতো বলা যাবে না। এখন অ্যারেঞ্জমেন্ট বাস্তবায়ন করাটাই মুখ্য। এখন পর্যন্ত যা হয়েছে এটা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।’ আমরা জানি না পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঠিক কোন বিষয় নিয়ে সন্তুষ্ট। গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের নেপিদোতে তিনি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে যে সমঝোতা চুক্তি করেছিলেন, সেখানে বলা হয়েছিল- আগামী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু এ বিষয়ে দেশটির আন্তরিকতা নিয়ে এরইমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা আর আন্তর্জাতিক চাপে সেই সমঝোতা স্মারকে মিয়ানমার সই করলেও তা বাস্তবায়নে গত এক মাসে কোন কাজ করেনি দেশটি। বরং এর মধ্যেই নতুন করে রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তাই যতক্ষণ না মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া শুরু করবে, ততক্ষণ তাদেরকে বিশ্বাস করতে চাই না। আর নিকট অতীতেও এ বিষয়ে মিয়ানমারের কথা দিয়ে কথা না রাখার ইতিহাস রয়েছে। তারপরও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো আমরাও আশা করি, মিয়ানমার দ্রুত তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে ভারমুক্ত করবে।