চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কতদূর যাবে এশিয়ার দেশগুলো?

রাশিয়া বিশ্বকাপ-২০১৮

রাশিয়া বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বে অংশ নেবে এশিয়ার পাঁচটি দেশ। দেশগুলোর ফুটবল পরিসর সমান না। এরপরও গ্রুপের শক্তির বিচারে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে যেতে পারে কেউ কেউ। সেটা নির্ধারণ করার জন্য বিশ্বকাপে দলগুলোর ভালো পারফরম্যান্সের সঙ্গে সেরা রেফারিংয়ের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। এবার দেখে নেয়া যাক, এশিয়ার পাঁচ প্রতিনিধির কে কী অবস্থায় রয়েছে।

সৌদি আরব
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬৭ নম্বরে রয়েছে সৌদি আরব। বিশ্বকাপে তাদের গ্রুপে আছে রাশিয়া, উরুগুয়ে এবং মিশর।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

সৌদিকে নিয়ে উৎফুল্ল হওয়ার কারণ: এই গ্রুপটি অনেক জটিল হতে পারে। রাশিয়া শীর্ষ দলগুলোর মধ্য সবচেয়ে দুর্বলতম এবং টুর্নামেন্টের প্রথমদিন তারা মাঠে নামবে স্বাগতিক হিসেবে। এই স্বাগতিক হওয়াটাই তারে জন্য ‘আশীর্বাদ’ হয়ে কাজ করতে পারে।

উরুগুয়ে খুবই ভালো দল, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তার ফর্মটা কয়েক বছর আগের মতো নয়। মিশর খুব বেশি প্রভাবশালী দল নয়, তবে আরব প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে ভালো ফল করা তাদের জন্য অসম্ভব নয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কিছু ভালো ফলাফল এবং পারফরম্যান্স রয়েছে মিশরের। সেই কারণেই প্রত্যাশার পারদ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। তবে সামগ্রিক ফিটনেস এবং কাজের বিচারে তেমন উন্নতি হয়নি।

কিন্তু বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ৩২ দলের মধ্য ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার নিচে সৌদি আরব। তাদের প্রায় সব খেলোয়াড়ই ঘরোয়া ফুটবলের। তাছাড়া গত নয় মাসের মধ্যে তিনবার কোচ পাল্টিয়েছে দলটি। বর্তমান কোচ অ্যান্থনিও পিজিজি তিননম্বর ব্যক্তি। মানসম্পন্ন স্ট্রাইকারের ঘাটতি রয়েছে দলটিতে। গত রোববারও বিশ্বকাপ পূর্ব প্রীতি ম্যাচে পেরুর কাছে ৩-০ গোলে হেরেছে দলটি।

সাউথ কোরিয়া
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬০ নম্বরে অবস্থান সাউথ কোরিয়ার। তাদের গ্রুপে রয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, সুইডেন ও মেক্সিকো।

উৎফুল্ল হওয়ার কারণ: নর্থ ইউরোপের দলের বিরুদ্ধে খেলার তেমন অভিজ্ঞতা নেই সাউথ কোরিয়ার। তবে সুইডিশদের বিরুদ্ধে কিছু ভালো ফল পেতে তারা সক্ষম। সাম্প্রতিক ইতিহাসে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে বেশ ভালো রেকর্ড রয়েছে তায়েগুগ যোদ্ধাদের। তাছাড়া জার্মানি বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছে কোরিয়ানরা। যদি সন হিউং-মিন, লি সেং-হু এবং লি জেই-সাং তাদের কাজটা ঠিকঠাক মতো করতে পারেন, তাহলে ভালো কিছু করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে সাউথ কোরিয়ার।

কিন্তু বাছাইপর্বেই বিভিন্ন পজিসনে কোয়ালিটি সম্পন্ন খেলোয়াড়ের অভাব চোখে পড়েছে দলটিতে। তাদের প্রস্তুতিপর্ব খুব বেশি ভালো ছিল না, আবার খুব খারাপও ছিল না। তবে সাম্প্রতিক ইনজুরি তাদের জন্য বেশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জায়ান্ট কিলার হয়ে উঠেছিল সাউথ কোরিয়া

ইরান
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ নম্বরে রয়েছে ইরান। বি-গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো, পর্তুগাল ও সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্পেন।

উৎফুল্ল হওয়ার কারণ: এশিয়ার সেরা দল হিসাবেই অনেকটা মানসিক প্রশান্তিতে থাকবে ইরান। গত সাত বছরে হাই-প্রোফাইল পর্তুগিজ কোচ কার্লোস কুইরোজ দলটিকে মোটামুটি অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সেটা দেখিয়েছে ইরানিয়ানরা। এই সময়ে ইরান বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জন ও অন্যদের সমীহ আদায় করে নিয়েছে।

কিন্তু তাদের গ্রুপটি বেশ কঠিন। তাদের উদ্বোধনী ম্যাচ হবে মরক্কোর বিরুদ্ধে। যেটা মোটেও সহজ হবে বলে মনে করছেন না ফুটবল বিশ্লেষকরা। এই ম্যাচে জিততে না পারলে কঠিন হয়ে যাবে ইরানের হিসেব-নিকেষ। সেক্ষেত্রে পরের দুই ম্যাচে স্পেন ও পর্তুগালকে হারাতে হবে তাদের। বিশ্বকাপের মূলমঞ্চে নামার আগে তাদের প্রস্তুতিটাও তেমন ভালো হয়নি। তাদের দুটি প্রীতি ম্যাচ বাতিল হয়েছে এবং অন্যটিতে তুরস্কের কাছে ২-১ হেরেছে।

জাপান
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬১ নম্বরে রয়েছে জাপান। সামুরাই যোদ্ধাদের গ্রুপ প্রতিপক্ষ থাকছে কলম্বিয়া, সেনেগাল ও পোল্যান্ড।

উৎফুল্ল হওয়ার কারণ: সব গ্রুপগুলোর মধ্য এইচ-গ্রুপটিকে বলা হচ্ছে মধ্যম গ্রুপ। ঘরোয়া এবং ইউরোপিয়ান অভিজ্ঞতা মিলিয়ে মিশিয়ে একটা ট্যালেন্ট দল ঘোষণা করেছে জাপানিরা। আগে থেকেই দলে রয়েছেন সিনজি কাগাওয়া, কাইসুক হোন্ডা এবং সিনজি ওকাজাগির মতো কয়েকজন প্রভাবশালী ফুটবলার।

কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ঘানার বিরুদ্ধে ২-১ ব্যবধানে হার জাপানকে বেশ হতাশ করেছে। যদিও দলের ইনফর্ম সব খেলোয়াড়কে ওই ম্যাচে মাঠে নামাননি দলের কোচ। তবু প্রশ্ন থাকছে, নতুন কোচ আকিরা নিশিনো কী শেষ পর্যন্ত দলকে উজ্জীবিত করতে পারবেন? বড় নাম সবসময় ভালো ফল উপহার দেয় না তার প্রমাণও বহু রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান ৪০ নম্বর। সি গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স, পেরু ও ডেনমার্ক।

উৎফুল্ল হওয়ার কারণ: কোচ বার্ট ওয়ান মারভিজক কোনো হাই-প্রোফাইল লোক নন, যিনি অল্পতেই দেশকে উৎসাহিত করতে পারবেন বা দারুণ কিছু করে দিতে পারবেন। কিন্তু দলকে আলো দেখাচ্ছেন এই মাঝারি মানের মানুষটিই। গত সপ্তাহে চেক রিপাবলিকের বিরুদ্ধে সকারুজদের ৪-০ গোলের জয় দলের অনেক উৎসাহ এবং আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কারণ।

দলে আছেন অভিজ্ঞ টিম কাহিল। তাকে নিয়ে অনেক দূর যাওয়ার আশা করছে অস্ট্রেলিয়ানরা। পেরু এবং ডেনমার্ক ভালো দল কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ভয় পাবে না কিছুই।

কিন্তু গ্রুপে অস্ট্রেলিয়ার জন্য সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। ২০১০ বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে যেমনটা ঘটেছিল, ফরাসিদের বিপক্ষে তেমন কিছুই ঘটতে পারে মনে করে  আতঙ্কিত অনেক অস্ট্রেলিয়ান। পাওলো গুয়েরেরো ফেরার পর পেরুও মোটামুটি উড়ছে। তাছাড়া ডেনমার্ক শিবিরে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের মতো টপ-ক্লাস ম্যাচ উইনার তো রয়েছেনই। সকারুজদের এই দলটা সামগ্রিকভাবে আগের মানের নেই, তবে তাদের সেরা হতে হবে।