কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা বোট মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় দৈনিক আজকের কক্সবাজার পত্রিকার সম্পাদক মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী ও পরিবারের অপর ৪ সদস্য করোনাভাইরাস এ আক্রান্ত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সস্ত্রীক মেয়র মজিবুর রহমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর আগে আক্রান্ত হয়েছেন পৌরসভার ২ জন কাউন্সিলর। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি বিপ্লব বড়ুয়া মুজিবুর রহমানের চিকিৎসার বিষয়টি তদারকি করছেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা জানান: কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান, করোনা সংকটের শুরু থেকেই পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ড সহ আশপাশের এলাকায় সচেতনতা, ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম সহ বিভিন্ন কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। পুরো পৌর পরিষদকে নিয়ে রাতদিন মানুষের মাঝেই ছিলেন মেয়র মজিবুর রহমান।
মেয়র মজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারি এবি সিদ্দিক খোকন জানান: ২৮ মে কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালাউদ্দিন সেতু ২ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান পজিটিভ হওয়ার পর ওইদিনই মেয়র মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী ফারহানা রহমান নমুনা দেন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে। ৩০মে মেয়র মজিবুর রহমান, তার স্ত্রী ফারহানা রহমান, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আজিম, তার স্ত্রী সেগুফতা ইয়াসমিন, আরেক জেঠাতো ভাই সেলিম এর স্ত্রী শামীমা খান এর রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন: মেয়র মজিবুর রহমানের রিপোর্ট পজিটিভ আসলেও কোনো উপসর্গ ছিল না। তারপরও প্রথমে তাকে কক্সবাজার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বিষয়টি দলের হাইকমান্ডসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবরে জানানো হয়। রাতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন তাকে যেন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ৩০ মে রাতেই তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
৩১ মে সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের করোনা বিভাগের আইসোলেশন সেন্টারে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী ফারহানা রহমানকে ভর্তি করা হয়।
মেয়র মজিবুর রহমানের প্রেস সচিব আহসান সুমণ জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া মুজিবুর রহমানের চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছেন।
এখন পর্যন্ত মেয়র মজিবুর রহমান মোটামুটি সুস্থ আছেন বলেও জানান তার প্রেসসচিব। কক্সবাজার পৌর পরিষদের সকল সদস্য ও কর্মকর্তাদের স্যাম্পল কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে আগামীকালের মধ্যে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন: মেয়র মজিবুর রহমানের চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছি সার্বক্ষণিক। কোনো উপসর্গ না থাকার পরও পজেটিভ হয়েছেন তিনি। এখন আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা মেয়র মজিবুর রহমান বলেন: যখন থেকে রাজনীতি শুরু করেছি তখন থেকেই আমার বাবার নির্দেশে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার আদর্শ দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনা সংকটের শুরু থেকেই মানুষের কাছাকাছি ছিলাম। মানুষকে সচেতন করা থেকে শুরু করে ত্রাণ সহায়তায় সার্বক্ষণিক যুক্ত ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে ঘুমানো পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করাটাই আমার নিত্যদিনের কাজ। মানুষের জন্য কাজ করতে পারলেই আমার ভালো লাগে। আমি সুস্থ হয়ে আবার ও মানুষের কল্যাণে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। তাই সবার কাছে দোয়া চাই।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহবুবুর রহমান জানান: কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ল্যাবে দুই মাসে ৬৫৬৫টি পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে ৭১৫ জন পজিটিভ হয়েছে।