সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে বিভিন্ন জেলামুখী মানুষের ঢলের চিত্র। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও স্থানীয় যানবাহনে করে ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ছাড়ছে লাখ লাখ মানুষ, এছাড়া সড়কে দেখা যাচ্ছে আগের মতো যানজট। ফেরিতে গাদাগাদি করে বাড়ি ফেরাসহ কিছু চিত্র ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
এই যখন সড়ক-নৌপথের পরিস্থিতি, তখন গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১ হাজার ৬০২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, আর প্রাণ হারিয়েছেন ২১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩ হাজার ৮৭০ জনে, আর মোট মৃতের সংখ্যা ৩৪৯ জন। গত এক সপ্তাহের তথ্য দেখলে বোঝা যায়, দিনের পর দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
ভয়াবহ সংক্রামক এই ভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব নানা পদক্ষেপ নিয়েও হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। মৃত্যু ও আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশেও ২৬ মার্চ থেকে ‘জরুরি ছুটি’ ঘোষণা করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা চলছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে গণপরিবহনসহ জনসমাগমমূলক সকল কার্যক্রম। কিন্তু এসব পদক্ষেপ কি কোনো কাজে আসছে? এই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসতে শুরু করেছে নানা মাধ্যমে।
বিভিন্ন তথ্য গবেষণা অনুসারে বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের শীর্ষ সময় অনুমান করা হয়ে থাকে, সেভাবেই সেসব দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ওইসব গবেষণায় ধরাই হয়ে থাকে যে, প্রতিটি দেশ কড়াকড়ি নিয়ম মেনে চলবে। সেইধারায় বৈশ্বিক গবেষণা অনুসারে, বাংলাদেশে সংক্রমণের চূড়ান্ত সময় ধরা হয়েছিল এই মে মাস, যা জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। কিন্তু বর্তমান সময়ের এই অনিয়ম যাত্রা ও সামাজিক দূরত্ব না মানার চিত্র পরিস্থিতি কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা কেউ বলতে পারবে না বলে আমাদের মনে হচ্ছে!
করোনাভাইরাসের নেই কোনো প্রথাগত চিকিৎসা, নেই প্রতিষেধক ভ্যাকসিন। তাই একমাত্র উপায় হিসেবে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এখন পর্যন্ত। প্রতিদিনের নিয়মিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য জানানোর পাশাপাশি, জনগণকে সাবধান করা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য। কিন্তু কে শোনে কার কথা! তথাকথিত জীবিকা ও উৎসবের কারণে দেশের একটি বড় অংশ জীবনকেই হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। বিষয়টা যেন এমন, এটিই বোধহয় জীবনের শেষ উৎসব! ইউরোপ-আমেরিকার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না চাইলে সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।