গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি লিটনের পিস্তুলের ছোড়া গুলিতে আহত শিশু শাহাদত হোসেন সৌরভ টানা ২৪ দিন চিকিৎসা শেষে আজ সোমবার হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়িতে ফিরেছে। দুপুরে সৌরভ তার বাবা-মার সঙ্গে পুলিশ পাহাড়ায় সুন্দরগঞ্জের গোপালচরণ গ্রামের নিজ বাড়িতে পৌঁছায়।
এর আগে সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সার্জারী বিভাগের কর্তৃপক্ষ সৌরভকে হাসপাতাল ত্যাগের ছাত্রপত্র দেন।
সৌরভকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছার পর আতষ্ক আর উৎকণ্ঠা বেড়েছে বাবা সাজু মিয়া ও মা মোছা. সেলিনা বেগমের। তাদের ধারনা যেকোনো সময় এমপি লিটনের লোকজন হুমকি বা কোনো অঘটন ঘটাতে পারেন। এ জন্য তারা সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপসহ সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফেরার পর সৌরভ জানায়, হাসপাতালে থাকতে ডাক্তার আমাকে বাইরে যেতে দেয়নি। এখন একাই হাঁটতে পারি। আমি বাড়িতে থেকে পাড়ার ও স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে পারব। তবে বাড়ির বাইরে ও স্কুলে যেতে এখন ভয় হয়। কারণ ওই এমপি লিটন যদি আবার গুলি করে।
সৌরভের বাবা সাজু মিয়া জানান, ছাত্রপত্র দেওয়ার সময় ডাক্তার বলেছে সৌরভের স্বাভাবিক চলাফেরা করতে সময় লাগবে। ওকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে উন্নত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, বাড়িতে এসে এখন কি থেকে কি হবে তা বলতে পারছি না। পরিবার-পরিজন নিয়ে আতষ্ক আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাতে হচ্ছে। তারপর আবার সৌরভের চিকিৎসার ব্যায় চালিয়ে অনেক টাকা ঋণ হয়েছে।
ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের সুহৃদয়বান, বিত্তশালী এবং দানশীল ব্যক্তিদের কাছে সাহায্যেরও আবেদন করেন তিনি।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসরাইল হোসেন বলেন, পুলিশ পাহাড়ায় শিশু সৌরভকে বাড়িতে আনা হয়েছে। সৌরভ ও তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও তাদের বাড়িতে সার্বক্ষণিক দু’জন গ্রাম পুলিশ রাখা হবে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় ২ অক্টোবর সরকার দলীয় এমপি লিটনের পিস্তুলের গুলিতে আহত হয় শিশু সৌরভ। স্থানীয় গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সে।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে গত ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। ১৪ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।