দলীয় প্রতীকে প্রথম এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে শেষ নির্বাচনের আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা লক্ষ্য করেছি, এ জন্য তিনি শুরু থেকেই ছিলেন কঠোর অবস্থানে। শেষ পর্যন্ত সিইসি তার কথা রেখেছেন, ভোট গ্রহণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কারণ এ নির্বাচনে ১৭৪টি কেন্দ্রের কোথাও গোলযোগ-সহিংসতা হয়নি, ভোট স্থগিত করতে হয়নি; অনিয়মের তেমন কোনো অভিযোগও ছিল না প্রার্থীদের। এমন নির্বাচন দেখে বিভিন্ন রাজনীতি দল এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তাদের মন্তব্য, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত অনেকগুলো খারাপ নির্বাচনের পর একটি ভালো নির্বাচনের দৃষ্টান্ত হলো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তারা এই কমিশনের অধীনে হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা এবং পৌরসভা নির্বাচনের নানা অনিয়ম তুলে ধরে বলেছেন, গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে সমালোচিত বর্তমান কমিশন দীর্ঘবছর পর দেশে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। এমন একটি নির্বাচনের পর স্বভাবতই ‘খুব খুশি’ হয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ভোট শেষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেছেন, প্রার্থী এবং ভোটারদের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রসংশাও করেন তিনি। এই নির্বাচনে খুশি হয়েছে আওয়ামী লীগও। নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার আগের করা ওয়াদার প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে ওয়াদা করেছিলাম, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। তবে সারাদির ধরে নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিক ও সন্তোষজনক দাবি করলেও ভোট শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, শেষ মুহূর্তে পর্দার অন্তরালে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণায় সূক্ষ্ম বা স্থূল ইঞ্জিনিয়ারিং ঘটতে পারে। পরাজয়ের পর ঠিক এমনই মন্তব্য করেছেন দলটির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান। যদিও তিনি সুনির্দিষ্ট করে ‘সূক্ষ্ম কারচুপি‘র বিষয়টি ব্যাখ্যা করেননি। তাদের এমন অভিযোগকে অনেকের মতো আমরাও মনেকরি, তা এই সুন্দর নির্বাচনকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রচেষ্টা। কেননা এই দাবির পক্ষে দলটি কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তাই আমরা বলতে চাই, শুধু বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা নয়, সত্যকে স্বীকার করে নেয়ার মানসিকতাও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে থাকা উচিৎ।