চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

এবতেদায়ী শিক্ষকদের বেতন না দেওয়া সেক্যুলারিজম নয়: সৈয়দ আবুল মকসুদ

স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতন না দেওয়া সেক্যুলারিজম নয় মন্তব্য করে লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, এই শিক্ষকরা ধর্ম শিক্ষা দেন বলে তাদের পক্ষে কথা বলা যাবে না, এমন ধারণা ঠিক নয়। তারা যদি শিশুদের সাম্প্রদায়িক শিক্ষা দেন তাহলে তার বিরুদ্ধে যেমন কথা বলতে হবে, তেমনই সরকারি রেজিস্ট্রেশনের পরও দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতন পাওয়ার বিষয়েও আমাদের কথা বলতে হবে।

তিনি বলেন: অপছন্দের কেউ যদি অমানবিকতার শিকার হন তাহলে তার পক্ষে কথা বলার নামই সেক্যুলারিজম। কিন্তু আমাদের বামপন্থীরা বিষয়টি বুঝতে না পারায় তারা একা একা হাঁটছে।

চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ভারতের আসামের উদাহরণ দিয়ে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন: সেখানে যা চলছে এটা তো সাম্প্রদায়িকতার চরম রূপ। বাংলাদেশ কিংবা অন্য কোন অঞ্চল থেকে হিন্দুরা আশ্রয় চাইলে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হবে, অথচ অন্য ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে যেসব মুসলমান ৫০ এর দশক থেকে সেখানে বসবাস করে আসছেন, তাদেরকে বের করে দেওয়া হবে– এটা তো হতে পারে না। হিন্দুদের গ্রহণ করে মুসলমানদের তাড়িয়ে দেওয়ার মানসিকতা অমানবিক।

‘এখন আমরা যারা সেক্যুলারিজমের কথা বলি তারাও যদি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং আসাম সরকারের মতো কথা বলি, পছন্দের লোক হলে এক রকমের কথা আর অপছন্দের কেউ অমানবিকতার শিকার হলে যদি আমরা চুপ থাকি তাহলে বিজেপি এবং আমাদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? সবার বিষয়ে ন্যায়সঙ্গত কথা বলার নামই তো সেক্যুলারিজম। কিন্তু আমাদের বামপন্থীরা সেটা বুঝতে পারছে না’, বলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।

তিনি বলেন: ব্যাংক এবং শিক্ষা খাতসহ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে ক্ষমতাসীনদের কারও কারও সীমাহীন দুর্নীতিতে যে অস্থিরতা চলছে তা নিয়ন্ত্রণ করা প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে কষ্টকর। প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছেন। তবে তার আশেপাশে থাকা কর্মকর্তা এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সকলকে দুর্নীতি এবং অনিয়ম নির্মুল করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর হয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন: এসব বিষয়ে সফলতার জন্য দক্ষ নেতৃত্বের প্রয়োজন। যাবতীয় সংকট দেখা এবং সেই সংকট মোকাবেলা করে নেতৃত্বের পর্যায়ে আসা লোকজন আমাদের খুবই কম। এ কারণে মিয়ানমারের পর ভারত আমাদের চাপে রাখার জন্য আসামকে উত্তপ্ত করছে। তারপরেও যতো দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে আসাম পরিস্থিতিও সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে।

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে সবাইকে মানবিক বোধ সম্পন্ন মানুষ হওয়ার আহ্বান জানান সৈয়দ আবুল মকসুদ।