রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়ি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের দখলে নেওয়ার ঘটনায় ফেসবুকে লিখেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহজাবীন খালেদ। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মওদুদের দখলে থাকা বাড়িটিতে বুধবার অবৈধ দখলমুক্ত করার অভিযান চলে। বিকেল নাগাদ গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নেয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক।
মুক্তিযুদ্ধে কে ফোর্স এবং ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধ চালানোর জন্য বিখ্যাত ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের মেয়ে মাহজাবীন খালেদ ফেসবুকে লিখেছেন,
“বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে গুলশানের বাড়িটি দখল করেছিল। উনি নিজেও আইনজীবী। নিজেই মামলা পরিচালনা করেছেন। শুনেছি তার সাথে ফাইট করে অন্য কোন আইনজীবীর মামলা জেতা নাকি রীতিমত চ্যালেঞ্জ। মহাশয় নিজে মামলায় রিট করে হেরে গেছেন আর সেটা এখন আর তিনি মেনে নিতে পারছেন না !
আবার বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া তার বাসার সামনে গিয়ে নাটক করে এসেছেন। এ নাটক জনগণ বুঝে। বিএনপি নেত্রীর দাবি সরকার দমন পীড়ন শুরু করেছে। দমনপীড়ন আওয়ামী লীগ সরকার করে না। আওয়ামী লীগের কাউকে দমনের প্রয়োজন পরে না। কারণ, দেশের আপামর জনতার দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ। দমনপীড়নের রাজনীতি তো করেছে খালেদা জিয়া নিজে। আমি ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়ার দমনের শিকাড় হয়েছি।
আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আর্মি অফিসার ছিলেন। সেই সুবাদে আমরা একটি সরকারি বাড়িতে ভাড়া দিয়ে থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু, খালেদা জিয়ার শাসনামলে ২০০৫ সালে খালেদা জিয়ার বোনের ছেলে মাইক্রো বাসে করে গুণ্ডা ভাড়া করে এসে আমার মাকে বাসা খালি করার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে গেছে। হুমকি দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি। আমাদেরকে সে বাড়ি থেকে সম্পূর্ন অবৈধভাবে বের করে দেওয়া হয়েছে। না কোন আদালতের আদেশ ছিল, না কোন সরকারি কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। সম্পূর্ন গুন্ডামি করে সন্ত্রাসীদের মত এসে আমাদের বাড়িটি দখল করে নিয়েছে।
এটাই কর্মফল। সৃষ্টিকর্তা দুনিয়াতেই বিচার দেখান। আপনি আজকে যদি কারো সাথে অন্যায় করেন, তাহলে জীবনের কোন না কোন সময় সেই পাপের সাজা ভোগ করতে হবে। আমাদেরকে কষ্ট দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে খালেদা জিয়া থাকতে পেরেছে? পারেনি। কারণ, আল্লাহর বিচার। এর উপর কিছু নাই।
স্পষ্ট করে বলতে চাই। আওয়ামী লীগ সরকার কাউকে উচ্ছেদ করেনি। মওদুদের দখল করা বাড়ীটি ছিল রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। রাষ্ট্র মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে সেই জায়গাটি দখল নিয়েছে। এখন তিনি বলছেন- ‘আমাকে সন্ত্রাসী কায়দায় বের করে দেওয়া হয়েছে । আমাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার ।’ উনার মত একজন বিজ্ঞ আইনজীবী যখন এসব বলে তখন এগুলো জনগণের কাছে কৌতুক মনে হয়। খালেদা জিয়া যখন রাস্তায় নেমে এমন কৌতুক করে তখন সারা দেশের মানুষ এগুলো দেখে হাসে। অতএব, এসব করে লাভ নেই। দেশের জনগণ এখন স্মার্ট, ডিজিটাল। তাদের সামনে এসব নাটক আর টিকবে না।”