চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এখন কেবল তদন্তের অপেক্ষা

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিচালনার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এবং হৃদয় বিদারক ঘটনার পর তা নিয়ে চলছে বহুমুখি বিচার-বিশ্লেষণ। স্বজন হারানোর বেদনা বুকে চেপে খোঁজা হচ্ছে নানা প্রশ্নের উত্তর। তবে সবকিছু ছাপিয়ে নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার দায় নিয়ে শুরু হয়েছে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের খেলা। আমরা লক্ষ্য করেছি, ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ত্রিভুবন বিমানবন্দরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। তারা সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছে, নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারের ভুল সংকেতের কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে পারে। এর কিছুক্ষণেরই মধ্যেই ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করে, নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী উড়োজাহাজটি অবতরণ করেনি। এখানেই শেষ নয়, এই অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারের সঙ্গে উড়োজাহাজটির পাইলটদের সর্বশেষ কথোপকথনের একটি অডিও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। সেই কথোপকথনেও নির্দেশনা সংকেত নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে অনেকেই মনে করছেন, দুইপক্ষের কথোপকথনে জিরো-টু এবং টু-জিরো নিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি হয়। ওই বিমানবন্দরে জিরো-টু দক্ষিণ দিকে এবং টু-জিরো উত্তর দিক নির্দেশ করে। অবশ্য নেপাল সরকার এসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনা তদন্তে খুব দ্রুততার সাথে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়। ওই কমিটির নেতৃত্বে রাখা হয় দেশটির সাবেক সচিব ইয়াগিয়া প্রসাদ গৌতমকে। এই ঘটনার তদন্ত করবে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত দল। আমরা জেনেছি, এরই মধ্যে দুই দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে ঘটনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাও শুরু করেছে। এর অর্থ দাঁড়ায় দুই দেশ সঠিক পথেই আছে। কেননা হতাহতের তালিকায় দুই দেশের নাগরিকই রয়েছে। আমরা মনেকরি, পুরো ঘটনা তদন্তের পর কে প্রকৃত দোষী, তা উঠে আসবে। জানা যাবে ঘটনার আসল কারণও। যা থেকে শিক্ষা নেবে পুরো বিশ্বই। তাই তদন্ত পর্যন্ত অামাদের অপেক্ষা করতেই হবে। তার আগে কাউকে অভিযুক্ত বা দোষারোপ করা ঠিক হবে না। তা না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়।