চলতি বছর দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭১২ জন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৬৫৫ জন। ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. এ বি মো. শামছুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৫ জন ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (৭ নভেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অর্ধশতাধিক ডেঙ্গু রোগী।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনজন এবং বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১২ জন রয়েছেন।
এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১২ জন। তবে স্বস্তির খবর হলো, ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৬৫৫ জন।
চলতি বছর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে- এমন রোগী সন্দেহে নমুনা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। শনিবার পর্যন্ত আইইডিসিআর দুটি মৃত্যুর পর্যালোচনা করে চলতি বছর ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে।
জানা যায়, ৭ নভেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ৫২ জনের মধ্যে ঢাকা শিশু হাসপাতালে দুইজন, বিজিবি হাসপাতালে তিনজন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনজন, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে নয়জন এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ৪৩ জন ভর্তি ছিলেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন ডেঙ্গু জ্বরের বিষয়ে অবশ্যই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ডেঙ্গুর ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যেমন আমাদের মশারি টানাতে হবে, মশার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, সিটি করপোরেশনগুলোর মশা নিধনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। ঘর বাড়ির আঙ্গিনা পরিস্কার রাখতে হবে। জমা পানি রাখা যাবে না।
ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা কী করতে হবে
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়, এমনকি কোনো চিকিৎসা না করালেও। তবে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই চলতে হবে, যাতে ডেঙ্গু জনিত কোনো মারাত্মক জটিলতা না হয়। ডেঙ্গু জ্বরটা আসলে একটা গোলমেলে রোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়।
সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত, ডাবের পানি ও অন্যান্য তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। খেতে না পারলে দরকার হলে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া যেতে পারে।
জ্বর কমানোর জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধই যথেষ্ট। এসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ব্যথার ঔষধ কোনক্রমেই খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে। জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছাতে হবে।