মঞ্চটা গড়ে দিয়েছিলেন নাসুম-মোস্তাফিজরা। বাকি কাজটা ছিল ব্যাটসম্যানদের উপর। শুরুর দিকে খানিকটা পা হড়কানো ভয় ধরালেও নাঈম-মাহমুদউল্লাহ বিপদ কাটিয়ে দেন। তাতে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ৯৪ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ৬ উইকেটের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
গত বুধবার নিউজিল্যান্ডকে ৬০ রানে গুঁড়িয়ে ৭ উইকেটের জয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। শুক্রবার ৪ রানে জিতে করে ২-০। তৃতীয় ম্যাচে ৫২ রানে জিতে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা।
পাঁচ টি-টুয়েন্টির লড়াইয়ে চতুর্থ ম্যাচে জিতে টানা তৃতীয় সিরিজ জয় ও কিউইদের বিপক্ষে প্রথমবার ছোট ফরম্যাটের সিরিজ বিজয় নিশ্চিত করল লাল-সবুজরা। শেষ ম্যাচ শুক্রবার।
বুধবার নিউজিল্যান্ড দলপতি টম ল্যাথাম টসে জিতে আগে বোলিংয়ের আমন্ত্রণ জানান মাহমুদউল্লাহদের। এসে ১৯.৩ ওভারে কিউইদের সবকটি উইকেট তুলে নিয়ে ৯৩ রানে অলআউট করে দেয় স্বাগতিকরা। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৬ উইকেট ও ৫ বল অক্ষত রেখে জয়ে নোঙর ফেলে বাংলাদেশ।
লিটন দাস অতি-আক্রমণাত্মক হতে যেয়ে উইকেট বিলিয়েছেন, করে গেছেন ৬ রান। সাকিব আল হাসানও একই, বেরিয়ে মারতে যেয়ে স্টাম্পিং, তার পাশে ৮ বলে ৮ রান। মুশফিকুর রহিম তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। উইকেটের বাইরের বল টেনে বোল্ড সুইপ খেলতে যেয়ে।
এ অবস্থায় জুটি বাধেন অপর ওপেনার নাঈম শেখ ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনে ধীরেসুস্থে এগিয়ে যোগ করেন ৩৫ রান। ম্যাচটা তখন হাতের মুঠোয়। একটি করে ছয়-চারে নাঈম ৩৫ বলে ২৯ করে ফিরে গেলে উইকেটে আসেন আফিফ হোসেন।
আফিফকে (৬৮*) নিয়ে বাকি পথ নিরাপদেই পাড়ি দেন মাহমুদউল্লাহ। টাইগার অধিনায়ক ২ ছয় ও এক চারে ৪৩ রানে অপরাজিত থেকে যান, ৪৮ বলে ইনিংস সাজিয়ে।
এর আগে শুধুই বোলারদের দারুণ প্রদর্শনীর গল্প। নাসুম ইনিংস শুরু করেছিলেন উইকেট মেডেনে। দ্বিতীয় স্পেলে এসে নির্ধারিত ৪ ওভার শেষ করলেন জোড়া উইকেট মেডেনে। হ্যাটট্রিকটা হয়নি। তবে কাজের কাজটা করে দিয়ে যান। যার শেষটা টানেন মোস্তাফিজুর রহমান। একশ নিচে থাকে লক্ষ্য।
কিউই ইনিংসের শুরুতে অতি-আক্রমণাত্মক হওয়ার মাশুল দেন ফিন অ্যালেন। এক ছয়ে ৮ বলে ১২ করার পর তাকে সাইফউদ্দিনের তালুবন্দি করেন নাসুম। আগেই আরেক ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকেও ফিরিয়েছেন তিনি। ৫ বল খেলা রবীন্দ্রকে রানের খাতাই খুলতে দেননি, বানান সাইফউদ্দিনের ক্যাচ।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টাইগার স্পিনারের জোড়া ধাক্কার পর বাকিরা মিলে লাগাম টেনে দেন কিউইদের রান চাকায়। যেইনা রানের চাকা ঘোরার মতো জুটি এনেছেন টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং, আঘাত হানেন মেহেদী।
এক চরে ২৬ বলে ২১ করা অধিনায়ক ল্যাথামকে দারুণ এক টার্নে সোহানের সহযোগিতায় স্টাম্পিং করে ফেরত পাঠান সাজঘরে।
সেখান থেকে ফের জোড়া হানায় কিউই মিডল এলোমেলো করে দেন নাসুম। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে হেনরি নিকোলকে (১) বোল্ড করে দেন। পরের বলে রানের খাতা খোলার আগেই ডি গ্র্যান্ডহোমকে উইকেটের পেছনে সোহানের ক্যাচ বানান।
৪ ওভারে ২ মেডেনে ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিজের কাজটা শেষ করেন নাসুম। সেখানে দায়িত্ব বুঝে নেন মোস্তাফিজ। ৩.৩ ওভারে ১২ রানে ৪ উইকেট তার।
টম ব্লান্ডেলকে (৪) নাঈমের ক্যাচ বানিয়ে শুরু ফিজের। কোল ম্যাককোনিকে (০) দর্শনীয় এক ফিরতি ক্যাচে ফেরান। কাটা হয়ে থাকা উইল ইয়াংকে বানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ। ৫ চার এক ছয়ে ৪৮ বলে ৪৬ করে যান ইয়াং।
কিউই ইনিংসের শেষটাও টানেন ফিজ। ব্লেইর টিকনেরকে মেহেদীর তালুবন্দি করে। মাঝে এজাজ প্যাটেলকে বোল্ড করে দেন সাউফউদ্দিন। ৩ ওভারে ১৬ রানে ওই এক উইকেট তার।
সাকিব উইকেটশূন্য টানা দ্বিতীয় ম্যাচের মতো, ৪ ওভারে ২৫ রানে। মেহেদী সমান ওভারে দেন ২১ রান, উইকেট ১টি।