একের পর এক ফেসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধান করে দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন।
সর্বশেষ গত রোববার বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে রাজধানীর সুরিটোলা বিদ্যালয়ের সামনে থাকা ময়লার ডাস্টবিনটি সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানোর ৬ ঘণ্টার মধ্যেই সে ডাস্টবিনটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘‘গত রোববার বিকেলের দিকে ওই স্কুলের সামনে থাকা ময়লা, ময়লার ডাস্টবিনটি দেখে ওই ডাস্টবিনের ওপর দাঁড়িয়েই আমি ফেসবুকে লাইভে আসি। এরপর ফেসবুক লাইভে বলি, ‘আমি একটি ময়লা ডাস্টবিনের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। এটি একটি ডাস্টবিন। ডাস্টবিন থাকতেই পারে। কিন্তু এটি একটি বিদ্যালয়ের সামনে, বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বারের সামনে এ ডাস্টবিন। বিদ্যালয়টিতে ১৫০০ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। বিদ্যালয়ের ফটকেই এ ডাস্টবিন।
জজকোর্ট থেকে হাইকোর্ট যাওয়ার পথে, গুলিস্তানে, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণির সামনে আপনারা এই ডাস্টবিনটি পাবেন। আমার কষ্ট লাগে যে কারোই এটি চোখে পড়ে না। ১৫০০ বাচ্চা যে জায়গায় থাকে, সে বাচ্চার চোখের সামনে আপনি সারাক্ষণ, দুর্গন্ধের ডাস্টবিন রেখে দিয়েছেন। এদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেন। কোনো বিদ্যালয়ের সামনে দুর্গন্ধের ডাস্টবিন থাকতে পারে না। আল্লাহর ওয়াস্তে এদের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি দেন। এদের যদি দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি দেন আমার বিশ্বাস তখনই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে। এই ফেসবুক লাইভের ৬ ঘণ্টার মধ্যেই ওই ডাস্টবিনটি সরিয়ে নেওয়া হয়।’’
ডাস্টবিন সরিয়ে নেয়ার ঘটনায়ই একমাত্র নয়! এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন এই ব্যারিস্টার। পথে নরসিংদীর শিবপুরে সড়কের মাঝে একটি বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক খুঁটি দেখতে পান তিনি। তখনই গাড়ি থেকে নেমে ফেসবুক লাইভে এসে ওই খুঁটিটি সরাতে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এ আইনজীবী।
অবাক করা ঘটনা হলো, রাত পেরুতে না পেরুতেই সেই খুঁটি সরিয়ে ফেলে কর্তৃপক্ষ। এতটা দ্রুততার সাথে খুঁটি সরানের সেই ঘটনা এই আইনজীবী তার নিজের ফেসবুকে যখন শেয়ার করেন তখনই ঘটে ভিন্ন ঘটনা! সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার সড়কের মধ্যে থাকা বিপজ্জনক সব খুঁটির ছবি মানুষ পাঠাতে থাকে তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে। এরপর সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার মেসেঞ্জারে আসা সবগুলো খুঁটির ছবি এক সঙ্গে করে গত বুধবার হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট করেন।
ওই রিটে সারাদেশের সড়ক মহাসড়কের মধ্যে থাকা সব ধরনের বিপজ্জনক খুঁটি দ্রুত অপসারণ চাওয়া হয়। এরপর সেই রিটের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কে থাকা বৈদুতিক খুঁটিসহ সব ধরনের বিপজ্জনক খুঁটি সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেন।
এসকল কর্মকাণ্ডই শুধু নয়। জন্মস্থান সিলেটে নিজ খরচে প্রায় অর্ধশতাধিক কাঠের ব্রিজ তৈরি করেছেন এই আইনজীবী। এছাড়া করেছেন একাধিক খেলার মাঠ। আর চলার পথে জখনই যেখানে কোন সমস্যা দখেন সে সমস্যা সমাধানের আহবান জানান ফেসবুক লাইভে।