মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একাত্তরে দেশে থাকার প্রমাণ হিসেবে ওই সময়ের দৈনিক পাকিস্তান সংবাদের মূল কপি প্রধান বিচারপতিসহ ৪ বিচারপতিকে দেখিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, নথিবদ্ধ থাকা সংবাদই প্রমাণ করে অপরাধের সময়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দেশেই ছিলেন।
মঙ্গলবার এ মামলায় শুনানি শেষে ২৯ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। এরপরও পরের দিন (আজ বুধবার) আবারও এই মামলা আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রাখা হয়। কারণ আসামিপক্ষের দাবির জবাব দিতে একটি দলিল উপস্থাপন করতে চেয়েছিলো রাষ্ট্রপক্ষ।
আপিল শুনানিতে একাত্তর সালের ২৯ মার্চ থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দেশে ছিলেন না বলে দাবি করে আসামিপক্ষ।
ওই দাবিকে মিথ্যা উল্লেখ করে তার দেশে থাকার স্বপক্ষে ১৯৭১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দৈনিক পাকিস্তানে প্রকাশিত সংবাদের ফটোকপি আদালতে দাখিল করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
ওই প্রতিবেদনের ফটোকপিকে ভুয়া ও বানানো বলে দাবি করে আসামি পক্ষ। এই পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগার থেকে ওই পত্রিকার মূল কপি সংগ্রহ করে আপিল বিভাগের জমা দেওয়ার জন্য আবেদন জানান।
এরপর সাকার শুনানি আবারও কার্যতালিকায় আসে। আপিল বিভাগে উপস্থাপন করা সংবাদটির শিরোনাম ছিলো ‘বোমার আঘাতে ফজলুল কাদেরের ছেলে আহত, গুলিতে ড্রাইভার নিহত’। প্রধান বিচারপতিসহ বেঞ্চের অন্য তিন বিচারপতি নথিটি দেখেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দেশে থাকা সংক্রান্ত নথিটি আপিল বিভাগে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করলে আপিল বিভাগ বলেন, বিষয়টি তারা তাদের মতো বিবেচনা করবেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, পত্রিকাটির মূলকপি বাংলা একাডেমির যার কাছে ছিলো তিনি গতকাল দুপুর ১টায় উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও সময়মতো আসতে পারেননি। আদালতকে গতকালই তা জানানো হয়। আজকে শুনানিতে শুধু এই কাগজটিই দেখেছেন ৪জন বিচারপতি।
তিনি বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীও পত্রিকার মূল কপিটি দেখেছেন। ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তখন যদি দেশে না-ই থাকেন তাহলে ওই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার কোনো কারণই ছিলো না। তিনি দেশে ছিলেন বলেই ওই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিলো।
২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সাকা চৌধুরীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।