জার্মানি যাকে ধরে, ছারখার করে ছাড়ে- কথা উল্টে গেলে কেমন অনুভব হতে পারে? এখন ভালোই টের পাচ্ছেন জোয়াকিম লো। তার হাত ধরে ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে নিয়ে তাদেরই মাঠে ছেলেখেলা করেছিল জার্মানরা। ৭-১ গোলের ওই হারকে বলা হয় ব্রাজিলের সর্বকালের সবচেয়ে লজ্জার হার। মঙ্গলবার এস্তাদিও ডে লা কার্তুজারে সেরকমই এক স্মৃতি ফিরে এলো। শিকারী এবার নিজেই শিকার। জার্মানদের জালে গুণে গুণে ছয়বার বল জড়িয়ে তৃপ্তির হাসি হেসেছে স্পেন।
স্পেনের কাছে ৬ গোল হজম করার পর যথারীতি শুরু হয়ে গেছে পরিসংখ্যান ঘাঁটাঘাঁটি। শেষ কবে, কার কাছে এভাবে জার্মানরা এত গোল হজম করেছিল। তা নিয়ে চলছে কথা চালাচালি। এসব পরিসংখ্যানের ধার ধারেননি জার্মানি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) প্রধান অলিভার বিয়েরহফ। নিজ দেশের এমন হারকে ২০১৪ সালের ব্রাজিলের ৭-১ গোলে হারের সঙ্গে তুলনা করে বসে আছেন তিনি।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে এর আগে একবারই পাঁচ বা তার চেয়ে বেশি গোল হজম করেছিল জার্মানরা। সেটা ছিল বিভক্ত জার্মানির একাংশ। ১৯৫৪ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে হাঙ্গেরির কাছে ৮-৩ গোলে হেরে যায় পশ্চিম জার্মানি। সেই লজ্জা অবশ্য মনে রাখেনি জার্মানরা, কারণ ফেরেঙ্ক পুসকাসের ‘কিংবদন্তির’ হাঙ্গেরিকে ফাইনালে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপের সঙ্গে ৮ গোলের হারের শোধও তুলেছিল পশ্চিম জার্মানি।
বিভক্ত হওয়ার আগেও অবশ্য ৬ গোল খাওয়ার কীর্তি আছে জার্মানির। ১৯৩১ সালে অস্ট্রিয়ার কাছে ঠিক ৬-০ গোলে হেরেছিল দেশটি, সেটা ছিল প্রীতি ম্যাচ।
এসব পরিসংখ্যান ধরলে স্পেনের কাছে ৬ গোলের হারটা গত এক শতাব্দীতে জার্মানদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। ম্যানুয়েল নয়্যার আরও হাফডজন সেভ না করলে ব্যবধান ১০ গোলও হয়ে যেতে পারত! নিজ দেশের এই হার দেখে ক্ষোভ ধরে রাখতে পারেননি বিয়েরহফ, ‘২০১৪ সালে ব্রাজিল মাঠ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। আজ আমাদেরও তাই হয়েছে। আশা করি এমনটা আর হবে না।’
উয়েফা নেশনস কাপের সেমিফাইনালে উঠতে স্পেনের বিপক্ষে ড্র হলেই চলতো, সেখানে এমন হেরে শেষ চারে আর ওঠা হয়নি চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। এমন হারের পর চাকরি হারানোর ভয় আছে কিনা, সে প্রশ্ন শুনে জোয়াকিম লোর উত্তর ছিল, ‘আমার কী চাকরি নিয়ে ভয়ে থাকা উচিৎ? এটা অন্যরা উত্তর দেবে।’
বিয়েরহফও নিশ্চিত করেছেন, কোচের উপর থেকে ভরসা হারাচ্ছেন না তারা, ‘লোয়ের উপর এখনো আমাদের আস্থা আছে। এই খেলা দেখে কিছুই পাল্টাবে না।’