১১৯ যাত্রী নিয়ে ৩২ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়তে থাকা এক উড়োজাহাজের সামনের কাঁচ ভেঙ্গে যাওয়ার পরে পাইলটের বুদ্ধিমত্তায় প্রাণ বেঁচেছে যাত্রীদের। দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করে উড়োজাহাজটিকে জরুরি অবতরণ করতে সক্ষম হন পাইলট। এ ঘটনায় চীনজুড়ে চলছে পাইলটবন্দনা।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সিচুয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ১১৯ জন যাত্রী নিয়ে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমের চংকিং থেকে তিব্বতের লাশায় যাচ্ছিল। হঠাৎ পাইলটের সামনের উইন্ডস্ক্রিন ভেঙ্গে বাতাসে উড়ে যায়। নিশ্চিত দুর্ঘটনার হাত থেকে পাইলট লিউ চুয়ানজিয়ান যাত্রীদের রক্ষা করেন।
বিমানের পাইলট লিউ চুয়ানজিয়ান স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মাঝ আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় ককপিটের ভেতরে হঠাৎ প্রচণ্ড জোরে শব্দ হতে থাকে। আমি দেখলাম সামনের কাঁচটিতে ফাটল ধরেছে। তখন জোরে একটা শব্দ হলো। তারপর দেখি আমার কো-পাইলটের শরীরের অর্ধেকটা জানালা দিয়ে উড়োজাহাজের বাইরে চলে গেছে। কো-পাইলটের সিটবেল্ট বাঁধা ছিলো বলে রক্ষা। তাকে টেনে টুনে ককপিটের ভেতরে নিয়ে আসা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এরপর উড়োজাহাজে ভেতরে তাপমাত্রা ও বাতাসের চাপ দ্রুত কমে যেতে শুরু করে। সেসময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতিও নিচে পড়তে থাকে। ককপিটের ভেতরে যা কিছু ছিলো সবই বাতাসে ভাসতে থাকে। আমি রেডিওতে কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। বিমানটি এতো জোরে কাঁপছিল যে আমি মিটারও পড়তে পারছিলাম না।’
চীনের উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, সহকারী পাইলট হাতে চোট পেয়েছেন। তার মুখের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গেছে। কো-পাইলটের শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে গেছে। পাইলট অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে বিশ মিনিটের প্রচেষ্টায় উড়োজাহাজটিকে চেঙ্গু সুয়াঙ্গুলি বিমানবন্দরে অবতরণ করতে সক্ষম হন।
এই ঘটনার পর সোশাল মিডিয়াতে লোকজন পাইলট লিউর প্রশংসা করছেন। #ChinaHeroPilot হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং করছে চীনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সিনা ওয়েইবোতে। অনেকেই পাইলটকে পুরষ্কার দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। আবার অনেকে বলছেন, উড়োজাহাজের ভেতরে নিরাপত্তা বাড়াতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উড়োজাহাজের সামনের কাঁচ ভেঙে যাওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বজ্রপাত কিম্বা কোন পাখির সাথে আঘাত লেগেও এরকম হতে পারে। তবে পুরো উইন্ডস্ক্রিন উড়ে যাওয়ার ঘটনা খুবই বিরল।