চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

উজ্জ্বল সম্ভাবনায় টিউ‌লিপ ও রুশনারা

যুক্তরা‌জ্যের নির্বাচ‌নে এবার নির্বা‌চিত হ‌তে পা‌রেন একা‌ধিক বাঙা‌লি নারী। উজ্জ্বল সম্ভাবনায় আছেন টিউ‌লিপ সি‌দ্দিকী এবং রুশনারা আলি। রূপা হকও খুব পি‌ছি‌য়ে নেই। 

ত‌বে প্রধান দু’ দল ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ ও বিরোধী লেবার পার্টির লড়াইয়ে কোন দল জয়ী হবে তা কেউ আগাম বলে দিতে পারছে না।

একদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের কনজারভেটিভ পার্টি ১ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলো বিরোধীদল এড মিলিব্যান্ডের লেবার পার্টির চেয়ে। তবে শেষ দিনের জরিপ অনুযায়ী দু’ দল ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে সমান অবস্থানে রয়েছে।

এবারের নির্বাচনে অবশ্য তুরুপের তাস ধরা হয়েছে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি)কে। জরিপ বলছে, স্কটল্যান্ড থেকে প্রায় ৫৬টি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে দলটির। নিশ্চয়ই জানা আছে, বৃটিশ সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ৩২৬টি আসনের। তবে প্রধান দু’ দলেরই এটি পাবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে ছোট দলগুলো বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

এসব হিসাব নিকা‌শের ম‌ধ্যে এবারই প্রথম ১১ জন বৃটিশ বাঙা‌লি এমপি পদে প্রার্থী হ‌য়ে‌ছেন। এর মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক লেবার দলের। বিভিন্ন জরিপের মতে বিজয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবেক ছায়া শিক্ষামন্ত্রী রুশনারা আলী, বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকি ও রূপা হক। কনজারভেটিভ পার্টি থেকে একমাত্র ম‌নোনয়ন পাওয়া মিনা রহমানও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বৃটেনের নির্বাচনী ইতিহাসে অভিবাসী প্রার্থী নিয়ে এতো মাতামাতি হয়নি কোনোদিন। রুশনারা আলীর জয় বিষয়ে তার দল এতোটাই নিশ্চিত যে তাকে ম‌নোনয়ন দি‌তে দ্বিতীয়বার ভাবে‌নি। লন্ডনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে তাকে দ্বিতীয়বারের মতো মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ১৯৭৫ সালের ১৪ মার্চ জন্ম নেয়া অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট রুশনারা আলীর জয় সুনিশ্চিত। এই আসনের প্রায় এক লাখ পঁচিশ হাজার ভোটারের বেশির ভাগই বাঙা‌লি। আর এ ভোটকে কেন্দ্র করে বাঙা‌লি ক‌মিউনিটি সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে কাজ করছে রুশনারা আলীর জন্য।

আবার নির্বাচিত হলে কমিউনিটির জন্য রুশনারা হাউজিংসহ সমস্যাগুলো সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। গত পাঁচ বছরে কমিউনিটির বেশির ভাগ সমস্যা তিনি সামনে থেকে সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। এরমধ্যে অন্যতম ছিলো বৃটেন থেকে বাংলাদেশে সঠিকভাবে মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পাঠানো।

এছাড়াও লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে বেশ এগিয়ে আছেন ক্যামব্রিজ পড়ুয়া কিংস্টন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক রূপা হক।

আর লেবার দলের প্রার্থী হয়ে লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের তনয়া শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিকী।

এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে বেশকিছু অপপ্রচারের সম্মুখিন হতে হলেও এটা নির্বাচনে প্রচারে প্রভাব বিস্তার করবে না বলে চ্যানেল আইনঅনলাইনকে জা‌নি‌য়ে‌ছেন তিনি।

প্রায় ৭৫ হাজার ভোটারের এই আসনে বাঙা‌লি ভোটারের সংখ্যা খুব বে‌শি নয়। তবে নির্বাচনে জয়ী হলে লেবার দলের মূল ইশ‌তেহা‌রের স‌ঙ্গে ওই এলাকার বাঙা‌লি‌দের জন্য আরো বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেবেন বলে তিনি জানান। এর মধ্যে হাউজিং অন্যতম।

এই আসনে নির্বাচনের আগে টিউ‌লিপ নর্থ লন্ডনের ক্যাম্পডেন কাউন্সিলের রিজেন্ট পার্ক ওয়ার্ডের নির্বা‌চিত কাউন্সিলর ছিলেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবারের রাজনীতি শুরু করেন টিউলিপ সিদ্দিকী। ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি অর্জ‌নের পর সরকার, নীতি ও রাজনীতি বিষয়ে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন। লেবার পার্টির যুব সংগঠন ইয়াং লেবারের নেত্রী হিসেবে তিনি বেশ পরিচিত।

সর্বশেষ প্রাক নির্বাচনী জরিপে টিউলিপকে ৪৮ শতাংশ ভোটার নির্বাচনে জয়ের ব্যপারে এগিয়ে রেখেছেন। কনজারবেটিভ দলের টরি সায়মন মার্ক্স ৩২ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। আর লিবারেল ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রার্থী মাজিদ নেওয়াজ পেয়েছেন ১০ শতাংশ ভোটা‌রের সমর্থন।

টিউলিপের আসনে তুমুল লড়াই হবে বলে মনে করছে ব্রেট ফ্রেড। এই নির্বাচনে সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে বাজিও ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে গতবার নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও এবার লেবার মা‌নে টিউ‌লিপ স্বাভাবিকভাবেই জিতবেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মত। এছাড়া তাকে সমর্থন দিয়ে প্রচারণা চা‌লি‌য়ে‌ছেন বৃটেনের প্রথম বাঙা‌লি এমপি রুশনারা আলি।