চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঈদে যেসব নাটক নিয়ে আসছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ

‘ঈদের জন্য আমি টোটাল ৩৫ থেকে ৩৬ দিন শুটিং করেছি’

তরুণ নাট্যনির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ। নির্মাণের মুন্সিয়ানা দেখিয়ে এরই মধ্যে এসেছেন আলোচনায়। তার নির্মিত নাটকগুলো পেয়েছে জনপ্রিয়তা। ২০১১ সালের বিজয় দিবসে বান্নার রচনা ও পরিচালনায় প্রথম নাটক ‘ফ্ল্যাশব্যাক’ প্রচার হয়েছিল। প্রথম নাটকেই তিনি বাজিমাত করেন। বর্তমানে সব শ্রেণির দর্শকদের কাছে বান্নাহর নাটক মানেই অন্যরকম ভালো লাগা। এই নির্মাতা এবারের ঈদকে টার্গেট করে বেশ কিছু নাটক নির্মাণ করেছেন। সেসব নিয়ে তিনি কথা বললেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে…

অন্যবারের তুলনায় এবার ঈদের জন্য একটু বেশি কাজ করেছি। সবগুলো কাজই বলতে গেলে ব্যতীক্রম। আমি নিজের দিক থেকে চেষ্টা করেছি বেস্ট অ্যাফোর্ড দেয়ার। কারণ, আমার নাটক দেখার জন্য একটা শ্রেণির দর্শক তৈরি হয়েছে। আমার কাজগুলো দেখার জন্য তারা মুখিয়ে থাকে। ফেসবুক, মুঠোফোনে তারা সবসময় আমাকে নক করে, কখন কি কাজ আসছে। আমি কখনোই মানহীন কাজ দিয়ে তাদের হতাশ করে চাইনা। আর ঈদ হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। এসময় দর্শকদের ভালো কাজ উপহার দেয়ার জন্য আমি বদ্ধপরিকর।

ঈদের জন্য অনেকগুলো নাটক বানিয়েছি। এরমধ্যে রয়েছে সুখী পরিবার, বোন, মানুষ, সুখ, ছাত্র, চশমায় লেগে থাকা ভালোবাসা, ব্রাজিল ভার্সেজ আর্জেন্টিনা, গল্পটা, হোম টিউটর, আর্জেন্টিনা ভার্সেস ব্রাজিল, ভাই কিছু বলতে চায়, মেয়েটির রাগ বেশি, নিয়তি, সাংসারিক ভালোবাসা। এরমধ্যে ৪ টি নাটক অনলাইনে প্রকাশ হয়েছে। বাকিগুলো একে একে প্রকাশ পাবে। এবার অনলাইন (ইউটিউব) এর জন্য বেশ কিছু কাজ করেছি। টেলিভিশনের চেয়ে অনলাইনের নাটকে প্রচারের সংখ্যা বেশি হবে। এর কারণ হচ্ছে, বিশ্বকাপ ফুটবল। এর কারণে টেলিভিশনে নাটকের সংখ্যা কম।

শুধু আমি নই, অনেক পরিচালক এবার অনলাইনের দিকে ঝুঁকেছেন। তাছাড়া প্রযোজকদেরও চাহিদা অনলাইনে এর নাটক নির্মাণ। যার কারণে এবার এতগুলো কাজ করতে পেরেছি। তবে আমার কাজ করতে হিমশিম খেতে হয়নি। এর কারণ হচ্ছে টিম ওয়ার্ক। বাইরের দেশ যেমন পার্শ্ববর্তী ইন্ডিয়াতে তারা ভালো ভালো কাজ করতে পারে এর কারণ হচ্ছে, তাদের টিম খুব শক্তিশালী। আমি মনে করি, ভালো কাজের নেপথ্যে একটা শক্তিশালী টিম খুব সাহায্য করে। আমি গত কয়েক বছর ধরে এটা তৈরি করার চেষ্টা করেছি। ঈদের জন্য আমি টোটাল ৩৫ থেকে ৩৬ দিন শুটিং করেছি। সবগুলো দিন মিলিয়ে আমার শুটিং এর অভিজ্ঞতা হলো একটা টিম থাকা খুব জরুরি। টিম যদি ঠিক থাকে ভালো কাজ নিশ্চিত বেরিয়ে আসবে।

টিম বলতে আমি বুঝতে চেয়েছি পরিচালক, ডিওপি, এডিটর, সাউন্ড মানে ‘বিহাইন্ড দ্য স্ক্রিন’ যারা কাজ করেন। তাদেরকে আমরা বেশি গুরুত্ব দেইনা। আমরা সবসময় নজর রাখি শিল্পীদের দিকে। আমার এডিটর, যে মিউজিক করছে, আমার যে সহকারী, কিংবা প্রডাকশন বয় তাদের অ্যাফোর্ড ছিল মারাত্মক। নইলে আমি এতগুলো কাজ করতে পারতাম না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এতগুলো কাজ জমা দিয়ে দিয়েছি। বাকি আছে দু-তিনটা। যেটা শিগগির দেব। এমনটা হইনি যে, অনেক কাজ করেছি বলে ‘খেই’ হারিয়ে ফেলেছি! এটা মোটেও হয়নি। কাজ কিন্তু খারাপ হয়নি। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি একটা বড়জোড় দুইটা কাজ একটু উনিশ-বিশ হয়েছে। বাকিগুলো হান্ড্রেড পারসেন্ট ওকে। আর এতগুলো কাজ করলে দু-একটা হতেই পারে!

এতগুলো কাজ করে আমি মাত্র দুইদিন লেট নাইট শুটিং করেছি। বুধবার ছিল আমার লেট নাইট শুটিং। সবগুলো কাজও শেষ। আমার সাথে যারা কাজ করেছেন সবাই ভীষণ খুশী, অবাকও হয়েছে। এরমধ্যে তানজিন তিশা আমার নির্দেশনায় সাতটা নাটকে কাজ করেছে, ছেলেদের মধ্যে নিশো ভাইয়ের কাজ হয়েছে সর্বোচ্চ, অপূর্ব ভাই প্রতিটি শিল্পী আমাদের সঙ্গে কাজ করে হ্যাপী, আমার টিমকে নিয়ে তারা হ্যাপী। এর কারণ হলো সিস্টেম। প্রি-প্রোডাকশন ও সিস্টেম ঠিক থাকলে ভালো কাজ করা সম্ভব। আমি ফিল করি, আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো অবস্থানে আছি। সব কাজ শেষ করে ঈদের দিন থেকে পুরোপুরি ফ্রি হতে পারবো।

আর এরজন্য আমি কৃতজ্ঞ আমার প্রযোজক, বিভিন্ন চ্যানেল ও ইউটিউব সহ যেসক প্লাটফর্মে আমার নাটক আসছে তাদের প্রতি। সবশেষে আমি আটির্স্টদের ধন্যবাদ দিতে চাই। অপূর্ব, আফরান নিশো, সাফা কবির, মেহজাবিন, তানজিন তিশা, পিয়া বিপাশা, তৌসিফ, ইরফান সাজ্জাদ যারাই আমার সঙ্গে কাজ করেছেন প্রত্যেকে আমাকে অনেক বেশি হেল্প করেছে। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। কারণ তারা সহায়তা না করলে আমি এতগুলো কাজ করতে পারতাম না। তারা বেশিরভাগ সময় কল টাইম মেনে শুটিংয়ে এসেছে। এজন্য আমি সময়মতো শুটিং শেষ করতে পেরেছি। এটা খুব ভালো লক্ষণ মনে হয়েছে আমার কাছে।

ছবি: অপূর্ব অভি