রাজধানী তেহরানে ইরানের পার্লামেন্ট ভবন এবং তাদের প্রয়াত সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির মাজারে একই সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পার্লামেন্টের এক নিরাপত্তা প্রহরী এবং মাজারে আরেক প্রহরী নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
তবে স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ‘তাসনিম’-এর বরাতে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, পার্লামেন্ট হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা ৭। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিতদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে সংখ্যাটি জানানো হযেছে বলে তাসনিম জানিয়েছে। বিষয়টি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে নিশ্চিত করা যায়নি বলে একে ‘অসমর্থিত সূত্র’ উল্লেখ করে তথ্যটি প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান।
ইরানের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন হামলাকারী হঠাৎ করেই একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করে বলে এক সংসদ সদস্যের সূত্রে জানায় দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরআইবি। ইরানের এমপি এলিয়াস হজরতি বলেছেন, তিনজন হামলাকারীর দু’জনের হাতে কালাশনিকভ রাইফেল এবং একজনের কাছে একটি কোল্ট পিস্তল ছিল।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে রয়টার্স পার্লামেন্টে গোলাগুলির ঘটনা থেমে গেছে বলে এর আগে জানায়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে এবং বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আইআরআইবি থেকে জানানো হয়েছে, পার্লামেন্টে হামলা এখনো চলছে এবং ওই হামলার ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছে। আইএসএনএ-কে এমপি সৈয়দ হোসেন নাকাভি-হোসেনি বলেছেন, তিন বন্দুকধারী এখনো এমপি কার্যালয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে আরেক এমপি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ-কে বলেছেন, পার্লামেন্টে হামলাকারীর সংখ্যা মোট ৪ জন। তাদের মধ্যে একজনের গায়ে কোনো ধরণের বেল্ট লাগানো আছে। তাকে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা এখনো ঘিরে রেখেছে।
হতাহতের তথ্য নিয়ে এখনো পরস্পরবিরোধী তথ্য দিচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
একই সময়ে পার্লামেন্ট ভবন থেকে বহু কিলোমিটার দক্ষিণে ইরানের আধুনিক ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের জনক ও ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমিনির মাজারেও গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মাজারের জনসংযোগ কর্মকর্তা আলী খলিলি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ-কে জানায়, সেখানে হামলাকারীদের একজন মাজারের বাইরে অবস্থিত ব্যাংকের সামনে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ওই হামলায় একজন নিহত এবং ৫ জন আহত হয় বলে জানান তিনি।
আইআরআইবি জানিয়েছে, মাজারে আত্মঘাতী হামলাকারীসহ মোট ৪ জন হামলা চালায়। সেখানে এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে এক বন্দুকধারী নিহত এবং এক নারী আটক হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে ইরানের পার্লামেন্ট এবং আয়াতুল্লাহ খোমেনির মাজারে হামলার বিষয়টিকে ‘সমন্বিত হামলা’ হিসেবেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
ইরানের পার্লামেন্ট এলাকা খুবই সুরক্ষিত একটি জায়গা। সেখানে কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হুট করে হামলাকারীরা ঢুকে পড়ল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এছাড়াও বন্দুকের মালিকানার বিষয়টি ইরানে খুবই কঠোর আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাই ধারণা করা হচ্ছে, পার্লামেন্ট এবং খোমেনির মাজারে হামলার জন্য ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো পাচার করে অবৈধ উপায়ে ইরানে ঢোকানো হয়েছে।