সিলেট থেকে: ২০১৪ সালে সিলেটে যখন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ হল বাংলাদেশের, বিপলু আহমেদ বিপলুর বয়স তখন ১৬! খেলেন মোহামেডানের অনূর্ধ্ব-১৬ দলে। সেই ম্যাচে গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েছিল দর্শক। বহু কষ্ট করে ছাদে উঠে খেলা দেখেছিলেন বিপলু। সেদিন থেকেই মনের কোণে পুষে রেখেছিলেন সুপ্ত এক বাসনা। একদিন খেলবেন এই মাঠে।
সোমবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে লাওসের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের ম্যাচে কেবল খেললেনই না, জয়ের নায়কও ‘লোকাল বয়’ বিপলুই। তার একমাত্র গোলেই আনন্দে মেতে উঠেছে খেলা দেখতে আসা প্রায় ২৫ হাজার সিলেটবাসী। বিপুল নিজেও আনন্দিত প্রিয় শহরবাসী, দেশকে আনন্দে ভাসাতে পেরে।
মাঠে তিনি মিডফিল্ডার। গোল করার চেয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করাই যার আসল কাজ। কোচেরও সেটাই প্রত্যাশা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু ২০ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার বলছেন ভিন্ন কথা, ‘কোচ আমাদের সবসময় বলেন, গোলের সুযোগ থাকলে অবশ্যই গোল করবা। কারণ অনেক সময় এতে গোল হয়। আমি দুইবার বল নিয়ে ঢুকেছিলাম। আমি চেষ্টা করেছি। আর আমার টার্গেটই ছিল এখান থেকে একটা গোল করার। সেটাই করেছি।’
ম্যাচের ৬০ মিনিটে জয়সূচক গোলটি এসেছে বিপলুর পা থেকে। গোল করেই উত্তর-পশ্চিম গ্যালারির দিকে ছুট দিয়েছেন। স্যালুট ঠুকেছেন। কার দিকে তাকিয়ে সেলুট? কাদের জন্য এমন উদযাপন?
লাজুক হাসি দিয়ে বিপলু জানালেন সেলুট-উদযাপনের কারণ, ‘ওই গ্যালারিতে আমার পরিবার ছিল। ভাইয়া ছিল। মূলত তার কারণেই আমি উঠে এসেছি। আমি যতটুকু এসেছি একমাত্র তার দ্বারাই। ভাইয়া ৫০০ টিকেট কিনে সবাইকে দিয়েছেন। তারা এসেছেন খেলা দেখতে।’
স্টেডিয়াম থেকে মাত্র পাঁচ মিনিট দূরত্বে বিপলুদের বাড়ি। এই জেলা স্টেডিয়াম দাপিয়েই আজকে জাতীয় দলের জার্সি তার গায়ে। নেপালের বিপক্ষে সেই ম্যাচের দিন প্রথমার্ধ দেখেই ফিরে গিয়েছিলেন ঘরে। কিন্তু সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন একটা স্বপ্ন, ‘২০১৪ সালে এই স্টেডিয়ামেই আমি খেলা দেখেছিলাম। আমার টিকিট ছিল। কিন্তু অনেক কষ্ট করে স্টেডিয়ামে ঢুকেছিলাম। তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল যে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে খেলবো। আর এই মাঠেই খেলবো। ইচ্ছাটা পূর্ণ হয়েছে।’