দলের ধারাবাহিক ব্যাটিং ব্যর্থতা, অ্যাশেজ খোয়ানো, বছরে সর্বাধিক টেস্ট হারের লজ্জার রেকর্ড— শেষ হতে চলা বছরে অধিনায়ক জো রুটের বিষণ্ণতার তালিকা দীর্ঘই। সেটিতে যোগ হল আরও একটি না পারা! ছাপিয়ে যাওয়া হল না পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফের গড়া এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
ইংলিশদের আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে মেলবোর্ন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮ রানে ফেরেন রুট। বোলান্ডের বলে স্লিপে ওয়ার্নারের ক্যাচ হন। সাথে শেষ হয় তার রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনাও। এবছর ব্যাট হাতে রুট যেভাবে এগোচ্ছিলেন, তাতে হুমকির মুখে পড়েছিল ইউসুফের গড়া বছরে সর্বাধিক রানের রেকর্ডটি।
২০০৬ সালে টেস্টে ১,৭৮৮ রান করেছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি সাবেক। ডানহাতি ইউসুফ এখনও শীর্ষেই থাকলেন। ১,৭০৮ রান করে বছর শেষ হল রুটের। ইংলিশ অধিনায়কের আক্ষেপ থাকল ৮০ রানের।
রেকর্ডটির তালিকায় দুইয়ে থাকাও হাতছাড়া হয়েছে রুটের। স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের থেকে মাত্র ২ রান পেছনে থেকে বছর শেষ করেছেন তিনি। ১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডানহাতি কিংবদন্তি করেছিলেন ১৭১০ রান।
ব্যাট হাতে ৬১ গড়ে রান করা ইংলিশ অধিনায়ক পেছনে ফেলেছেন ভারতের দুই কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার ও শচীন টেন্ডুলকারকে। ছাড়িয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ককেও।
১৮ বছরের একটি দেশিয় রেকর্ডও ভেঙেছেন রুট। টেস্টে এক পঞ্জিকাবর্ষে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহক বনে গেছেন। ২০০২ সালে মাইকেল ভন ১,৪৮১ রান করেছিলেন।
বছরের শেষটা ইংলিশ অধিনায়কের পক্ষে ছিল না। হারিয়েছেন আইসিসির টেস্ট ব্যাটারদের র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর স্থানটি। রুট এ বছর সেঞ্চুরি করেছেন ৬টি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এখনও দুহাত শূন্যে তোলার উপলক্ষ আনতে পারেননি। অ্যাশেজের বাকি দুই টেস্টে থাকছে সুযোগ!
চলতি অ্যাশেজে হার ধারাবাহিক হওয়ায় সেটি নিজেদের সাহসের ‘মূলে-আঘাত’ করেছে বলে মনে করেন রুট। ব্যক্তিগত রেকর্ড নয়, দল হিসেবে জিততে চান।
‘আমার সব শক্তি দিয়ে পরের ম্যাচ দুটি জেতার চেষ্টা করব। আমি স্বার্থপর বা নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারি না। যেকোনো কিছু থেকেও, আমাদের খেলোয়াড়দের সেরা জায়গায় ও টেস্ট জিততে সবরকমের চেষ্টা থাকবে।’
বছরটা একদমই ভালো গেল না ইংলিশদের। প্রথম টেস্টে ৯ উইকেটে, দ্বিতীয় টেস্টে ২৭৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারার পর মেলবোর্নে জুটল ইনিংস ও ১৪ রানে হারের ক্ষত। দুই টেস্ট হাতে থাকতেই খোয়াতে হল অ্যাশেজ, অবনমন হয়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায়ও। পাশাপাশি এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বাধিক ৯ টেস্ট হারের বাংলাদেশের রেকর্ডের সাথেও জুড়ে গেছে ইংল্যান্ডের নাম।