চতুর্থ দফার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে এই পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহীর বাগমারা, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গির কালডাঙ্গি, কুমিল্লার মাধবপুর এবং নরসিংসীর শ্রীনগরে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার জান মোহাম্মদ এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুজ্জামান শহিদের সমর্থকদের মধ্যে প্রভাববিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাটগাঙ্গোপাড়া বাজারে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল ইসলাম (৩৫) ও সিদ্দিকুর রহমান (২৮) এবং মমতাজ আলী (৩৫) ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
আহতদের উদ্ধার করে বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের উত্তর চন্দলা স্কুল বাজার ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার নিয়ে সকালে আওয়ামী লীগ সমর্থক দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ধারাল অস্ত্রের আঘাতে তাপস চন্দ্র পাল (২৬) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।নিহত তাপস ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাসিন্দা।
ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। তার নাম আবু আলম ওরফে পল্টু (১৭)। শনিবার বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পারিয়া ইউনিয়নের মাছপুরিয়া দাখিল মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ২টার পর ভোট কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তার ও জালভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু আলম ওরফে পল্টু নামে এক কিশোর নিহত হন।
নরসিংদীর রায়পুরায় শনিবার দুপুরে সংঘর্ষের সময় মাছ ধরার টেটাবিদ্ধ হয়ে পাড়াতলী ইউনিয়নের মধ্যনগর এলাকার হোসেন মিয়া (৫০) নামে একজন নিহত ও উত্তরবাখরনগর ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ অন্তত ২৫ আহত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে কয়েকটি কেন্দ্রে গোলযোগ শুরু হয়। উপজেলার মির্জাপুর, অলিপুরা ও শ্রীনগরের কয়েকটি কেন্দ্রে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালায়।
অলিপুরার নবিয়াবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র দখল করতে চাইলে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৫জন আহত হয়।
শ্রীনগর ইউনিয়নের রংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে টেটাবিদ্ধ হয়ে পাঁচজন আহত হয়। এর মধ্যে হোসেন মিয়া (৫০) নামে একজন নিহত হন।