পরিকল্পনাটা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের। গেইল-ম্যাককালামদের সামনে নতুন বল তুলে দেবেন আনকোরা মেহেদী হাসানের হাতে। তাতে ফলটা মিলল ষোলোআনাই। শুরুতেই রংপুর রাইডার্সের কোমর ভেঙে দেন তরুণ অফস্পিনার মেহেদী। অন্যপ্রান্ত থেকে রশিদ খানের বিশ্বস্ত হাতের লেগস্পিন। তাতেই ১৫৪ রানের লক্ষ্যটা মাশরাফীদের জন্য হয়ে গেল দূরের স্বপ্ন।
কোচের নির্দেশনা ছিল ম্যাচে নামার আগে ইউটিউব ঘেঁটে গেইল-ম্যাককলামের ব্যাটিংয়ের দুর্বল জায়গাগুলো খুঁজে বের করার। অবশ্য নির্ঘুম রাত কাটিয়েও বিস্ফোরক দুই ব্যাটসম্যানের কোনও ত্রুটিই খুঁজে পাননি মেহেদী! এরপর কোচের সঙ্গে কী আলাপ হয়েছিল সংবাদ সম্মেলনে বলে গেলেন কুমিল্লার রংপুর-বধের এই নায়ক।
‘গত দুইদিন ধরে শুনছিলাম ম্যাচটা আমি খেলব। ঘুম আসছিল না। গেইল-ম্যাককালাম সামনে! ইউটিউবে ভিডিও দেখে দুর্বল পয়েন্ট পাইনি। ওরা শুধু ছয়-চারই মারে। সকালে স্যারকে (কোচ) বলছিলাম, ওরা তো ছয়-চারই মারে। কোচ বলল, তাহলে তোর খেলা লাগবে না। বললাম, আমি পারব।’
প্রথম ওভারেই মেহেদী পেয়ে যেতে পারতেন ক্রিস গেইলের উইকেট। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে বঞ্চিত হন এই অফস্পিনার। পরিষ্কার এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচেন ক্যারিবীয় ব্যাটিংদানব। টেলিভিশন রিপ্লেতেও দেখা গেছে গেইল আউটই ছিলেন!
তাই হয়ত সংবাদ সম্মেলনে এসে আম্পায়ারকে ভুল বলতে কোন দ্বিধাই করলেন না তরুণ স্পিনার, ‘গেইলের পায়ে লাগে। আসলে ক্লোজ কল ছিল। আম্পায়ার হয়তবা মিসটেক করেছে। যাই হোক। গেইলের মতো উইকেট পাওয়া তো বড় বিষয়ই ছিল। চার ওভারে ২০ রানের কম দিয়েই আমি খুশি। সঙ্গে দুইটা উইকেটও পেলাম।’
প্রথম ওভারে গেইলের উইকেট না পাওয়ায় হাপিত্যেশ ছিল মেহেদীর। পরের ওভারে অল্পের জন্য ছুঁয়ে যায়নি ম্যাককালামের স্টাম্প। আরেকটি আফসোসে পুড়তে চাননি। সেই ম্যাককালামকে মেহেদী ফিরিয়েছেন বোকা বানিয়ে। রাইডার্সের ওপেনার ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলবেন বুঝতে পেরে মেহেদীর হাওয়ায় ভাসানো ডেলিভারি। ধরেই স্টাম্প উপড়ে দিলেন লিটন। স্টাম্পড। টি-টুয়েন্টিতে মেহেদীর প্রথম শিকার কিউই ব্যাটসম্যান।
এক বল পরই শাহরিয়ার নাফীসকে বোল্ড করে বাঁধনহারা উদযাপন। আর তাতে ম্যাচটাও জমে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৪ রানে জেতে কুমিল্লা। বিপিএলের পঞ্চম আসরে প্রথমবার খেলতে নেমেই পান ম্যাচসেরার পুরস্কার। গেইলকে আউট করতে না পারার আক্ষেপ তাতে হয়ত খানিকটা কমেছে মেহেদীর।