ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র নাবিকদের উদ্ধার করা হয়েছে। একইসাথে নিহত প্রকৌশলীর মরদেহ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন: পোল্যান্ড বাংলাদেশের দূতাবাস অ্যাম্বাসেডর সুলতানা লায়লা জানিয়েছেন, জাহাজের ২৮ জনকে কিছুক্ষণ আগে সেফ জোনে নিয়ে আসা হয়েছে। সবাই জাহাজ ছেড়ে বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডরের মাধ্যমে এখন নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছে। হাদিসুর রহমানের মরদেহ জাহাজ থেকে বহন করে নিয়ে আসা হয়েছে। প্যোলান্ডে হাদিসুর রহমানের জানাজা সম্পন্ন করা হবে। সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
এর আগে গতকাল বুধবার ইউক্রেনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধিতে’ রকেট হামলা হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হাদিসুর রহমান নামে এক প্রকৌশলী মারা যান, আহত হন ৩ জন। হামলার পরই জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়।
২৯ জন নাবিক নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে সমুদ্র বন্দরে আটকে আছে জাহাজটি। শিপিং কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়া তারা এই মুহূর্তে জাহাজ ছেড়ে উদ্ধারকারী জাহাজে নিরাপদ স্থানে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন এক নাবিক। ভয়াল সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিরাপদস্থানে যেতে দ্রুত বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি চেয়ে বাঁচার আকুতি জানান নাবিকরা। সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর আজ তাদের উদ্ধারের খবর এলো।
তুরস্ক থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ইউক্রেন যায় বাংলাদেশের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। দেশটির অলিভিয়া বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে ইটালিতে যাওয়ার কথা থাকলেও রাশিয়ার হামলায় সব অনিশ্চিত হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বন্দর এলাকা ছাড়ার সুযোগ না থাকায় এক সপ্তাহ ধরে একই জলসীমায় ভাসছিল জাহাজটি।
চ্যানেল আইকে নাবিকরা বলেছেন, বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাড়াও পাচ্ছেন না তারা।
এর আগে, জাহাজটিতে আটকে থাকা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও জাহাজে পর্যাপ্ত খাবার থাকায় তাদের দুশ্চিন্তা কম। তাদের ধারণা, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন আটকে থাকতে হতে পারে। সে বিবেচনায় খাবার বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলেন নাবিকরা। বাংলাদেশ থেকে উদ্বিগ্ন স্বজনরা নাবিকদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলছেন।