তেহরানে ইউক্রেনীয় উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার ঘটনায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ নিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
ভুল করে উড়োজাহাজ ফেলে দেয়া হলেও তা শেষ পর্যন্ত ইরানের নিরাপত্তার স্বার্থেই করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আল-জাজিরা জানায়, ২০১২ সারের পর এই প্রথম জুমআর নামাজে ইমামতি করেন খামেনি। খুতবায় তিনি অভিযোগ তোলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইরানের শত্রুরা উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার ঘটনা দিয়ে দেশটির শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে হত্যার ঘটনা আড়াল করতে চাইছে।
‘এই ঘটনায় আমরা যতটা দুঃখিত, আমাদের শত্রুরা এতে ততটাই আনন্দিত,’ বলেন তিনি, ‘তারা শুধু এতেই খুশি যে রেভল্যুশনারি গার্ডস এবং সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বের ওপর আঙ্গুল তোলার মতো কিছু একটা তারা পেয়েছে।’
খামেনিবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ট্রাম্প প্রশাসনের দেয়া সমর্থনকেও তিনি মিথ্যা বলে দাবি করেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে ইউক্রেনীয় উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় চাপের মধ্যে রয়েছে ইরান। শুধু তাই নয়, পুরো ইরানজুড়ে চলছে ইরানি সরকারের ‘মিথ্যাচারের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ আন্দোলন। আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগ দাবি করছেন বিক্ষোভকারীরা।
আর এ কারণেই আন্দোলনকারীদের শান্ত করতে এবং সরকারের পক্ষে সমর্থন যোগাতে দীর্ঘ সাত বছর পর আবারও জুমআর ইমামতি করলেন খামেনি।
গত ৮ জানুয়ারি ইরানের তেহরানে ইমাম খোমেনি বিমানবন্দরের কাছে ১৭৬ যাত্রী ও ক্রু নিয়ে ইউক্রেনের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। বিমানবন্দর থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উদ্দেশে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বোয়িং ৭৩৭-৮০০ জেট উড়োজাহাজটি তেহরানের দক্ষিণ-পশ্চিমে পারান্দের কাছে বিধ্বস্ত হয়।
এ ঘটনায় উড়োজাহাজে থাকা সবাই নিহত হন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা দুর্ঘটনার জন্য ইরানের ভুলে ছোড়া রকেট বা মিসাইলকে দায়ী করে আসলেও এ পর্যন্ত বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল দেশটি।
তবে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে প্রতিশোধমূলক রকেট হামলা চালানোর ওই সময়টাতে ‘ভুল করে’ দুর্ঘটনা ঘটানোর কথা স্বীকার করে ইরান।