দিনাজপুরে ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার প্রধান আসামী আসাদুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার বিকেল ৫টায় দিনাজপুরের আমলী আদালত ৭ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান সরকার আদালতে আসামী আসাদুল হককে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর ডিবি-গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইমাম আবু জাফর আসামীর বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
মামলার প্রধান আসামী আসাদুল হক শারীরিক অসুস্থ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় গতকাল শনিবার আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি বলে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা আদালতকে জানান। র্যাব-১৩ সদর দপ্তর রংপুর থেকে এর ডিএডি বাবুল খানের নেতৃত্বে শনিবার রাতে আসাদুলকে ঘোড়াঘাট থানায় সোপর্দ করে। রোববার বিকেল ৫ টায় পুলিশ আসামীকে আদালতে হাজির করেন।
অন্যদিকে দিনাজপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ঘটনাস্থল সরকারি বাসভবন শাপলায় আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ১০ জনের কথা থাকলেও শুক্রবার সন্ধ্যায় আপাতত: সেখানে ৪ জন আনসার মোতায়েন করা হয়।
গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টায় সরকারি বাসভবনে দুর্বত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ঘোড়াঘাট থানার ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওমর আলী। ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হলেও তার বাবা চিকিৎসাধীন আছেন রংপুরে। বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াহিদা খানমের আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পর রাতেই জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে ইউএনও ওয়াহিদা খানম।
এ ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াঘাট থানার একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রধান আসামি আসাদুল হক (৩৬)কে হিলি সীমান্তের কালিগঞ্জ এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় গ্রেপ্তার করে। এর আগে ঘোড়াঘাট থেকে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম (৪২) (আটকের পর বহিষ্কৃত) ও মাসুদ রানা (৩৪) নামে আরও দু’জনকে আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রধান আসামী আসাদুলের স্বীকারোক্তি মতে শুক্রবার দুপুরে ঘোড়াঘাট থেকে মুল পরিকল্পনাকারী রংমিস্ত্রি নবীরুল ইসলাম (৩২) এবং বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ থেকে হরিজন সম্প্রদায়ের সান্টু কুমার বিশ্বাসকে আটক করে র্যাব। সেই সাথে প্রধান আসামী আসাদুল ঘটনার সময় পরিহিত লাল রঙের টিশার্ট’টিও তার বাড়ি থেকে র্যাব উদ্ধার করে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় র্যাব-১৩ সদর দপ্তর রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানায়, চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের উপর হামলা চালিয়েছে ৩ জন। পরে আটক যুবলীগ নেতা (বর্তমানে বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলমকে ছেড়ে দেয় র্যাব।
ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পৃথকভাবে শনিবার সন্ধ্যায় ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় ৩ যুবককে আটক করে। এরা হলেন, ঘোড়াঘাট উপজেলা সদর ওসমানপুর সাগরপুর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ওরফে শাওন (৩৯), চক বামনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার ধারেন দাশের ছেলে শ্যামল দাস (৩০) ও একই এলাকার মৃত তৌমুদ্দিনের ছেলে ইউএনও কার্যালয়ের মালি মো. সুলতান (৩১)।
এছাড়া ইউএনও কার্যালয়ের মালি মো. সুলতানকে উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের এখনো আদালতে হাজির করা হয়নি।