আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ (এ কিউ আই এস) শাখার বাংলাদেশ ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা মাইনুল ইসলাম ও উপদেষ্টা মাওলানা জাফর আমিনসহ ১২ জঙ্গিকে আটক করেছে র্যাব।
বুধবার রাত ১ টায় এই গ্রেপ্তার অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, বিভিন্ন ধরণের ছুরি, জিহাদি বই ও জিহাদি প্রশিক্ষণের বই উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক প্রধান মুফতি মাহমুদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আল কায়েদা যখন ভারতীয় উপমহাদেশে কাজ শুরু করবে তখনই যেন তাদেরকে সাহায্য করা যায় সেই লক্ষ্যে হুজির কয়েকজন নেতা গোপনে ভিন্ন পরিচয়ে লোক সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।
তিনি আরো বলেন, এর আগে যারা হুজি ও হুজির মতাদর্শের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো তাদেরকেও গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা একত্রিত করতে কাজ করছিলো।
মুফতি মাহমুদ বলেন, র্যাব আরো জানতে পারে তারা ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ঈদের পর বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই র্যাব-৪ এর একটি দল গতকাল গোপন অভিযান চালায়। অভিযানে সদরঘাট থেকে একিউআইএস’র প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা মাইনুল ইসলাম ও উপদেষ্টা মুফতি জাফর আমিনসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
তিনি জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাদের আরো কিছু সদস্য খুলনা থেকে ঢাকায় আসছে। এরপর র্যাবের একটি দল এয়ারপোর্ট রেলস্টেশন থেকে একিউআইএস’র সক্রিয় সদস্য আলামীনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে। তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য মিরপুরে একটি বাসা ভাড়া করেছে।
র্যাব জানায়, গতকাল রাতে মিরপুরের ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আলতাফ হোসন ও শহীদুল ইসলামকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য, জিহাদী বইসহ গ্রেফতার করা হয়।
মুফতি মাহমুদ বলেন, আটক জঙ্গিরা ইতিমধ্যে বগুড়ায় একটি মাদ্রসায় প্রশিক্ষণের জন্য ২০ জনের একটি দল নিয়ে ঘাঁটি স্থাপন করেছে। দলটি ৩১৩ বদরের সৈনিক দল নামে পরিচিত। এদের ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তারা আধুনিক পদ্ধতিতে বোমা তৈরি এবং শারীরিক প্রশিক্ষণ নিতো।
তিনি আরো জানান, এই জঙ্গি গ্রুপের আর্থিক সহয়তাকারি দলকেও তারা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। সৌদি আরব ও দুবাই থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে এক জনৈক ব্যক্তি যোগাযোগ করে জাফর আমিনকে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহযোগিতা করেছে। এই নতুন জঙ্গি সংগঠনকে সফলভাবে পরিচালিত করার জন্য সব ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, এই জঙ্গিদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো কারাগারে আটক মুফতি মাইনুদ্দিনকে বিভিন্ন কৌশলে মুক্ত করা। তাদের দ্বিতীয় মিশন ছিলো যেসব দেশে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে সেখানে গিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় অংশ নেওয়া। বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর যে কোনো সময় আতর্কিত হামলা করে সেনাবহিনীর অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের শক্তিশালী করা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা তৈরি করাও তাদের উদ্দেশ্য ছিলো।