ঘোষণাটা দিয়েছিলেন আগেই। চলতি টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেবেন তিনি। ক্যারিয়ারের সেই আবেগঘন শেষ ম্যাচটি খেলে ফেললেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। ম্যাচে তার দল হারলেও বিদায়টা আলোকিতই করে রাখলেন এই অলরাউন্ডার।
সুপার টেনের বাঁচা-মরার’ ম্যাচে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ শেষে ভারতীয়রা যখন জয়-উল্লাস করছিলেন, অস্ট্রেলিয়া দল তখন মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছে। কিন্তু অজি দলের এক সদস্যের তখনও মাথা উঁচু। তিনি ওয়াটসন।
কঠিন পিচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের জন্য ব্যাট হাতে করেন অপরাজিত ১৮ রান। বল হাতেও সাফল্য দেখিয়েছেন ওয়াটসন। চার ওভারে ২৩ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। দলের অতি প্রয়োজনের সময় রোহিত শর্মাকে বোল্ড করার পর ফিরিয়েছেন সুরেশ রায়নাকে।
জাত অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। ব্যাটিং-বোলিংয়ের পর সেটার প্রমাণ করেন ফিল্ডিংয়েও। জেমস ফকনারের বলে যুবরাজের দেওয়া প্রায় অসম্ভব এক ক্যাচ লুফে নেন এক হাতে।
তাইতো ম্যাচ শেষে এক টুইট বার্তায় সাবেক সতীর্থ ও অজি স্পিন গ্রেট শেন ওয়ার্ন বলেন, তার পুরো ক্যারিয়ারটাই ছিল গ্রেট, ক্যারিয়ারের শেষটাও করলেন গ্রেটের মতো মাথা উঁচু করে।
ওয়াটসনের সাবেক আরেক সতীর্থ ও পেসার মিচেল জনসন বলেন, ওয়ান্ডারফুল ক্যারিয়ার। আমি মনে করি এটা আপনার জয় ছিল। কোনো সন্দেহ নেই যে, দর্শক ঠাসা মাঠের প্রতি মুহূর্ত আপনি উপভোগ করেছেন।
অসাধারণ ক্যারিয়ারের জন্য ওয়াটসনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভনও। টুইটারে তিনি বলেছেন, আজ রাতের অসাধারণ পারফর্মেন্সের জন্য ধন্যবাদ। এভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গন ছেড়ে যাওয়ায় কোনো লজ্জা নেই।
বর্ণাড্য ক্যারিয়ারের জন্য ওয়াটসনকে স্পেশাল অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সদ্য সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। অভিন্দন জানিয়েছেন ডেমিয়েন মার্টিন সহ অন্য ক্রিকেটা তারকারা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে গেলেও ঘরোয়া ও আইপিএল সহ অন্যান্য টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট আরো কিছুদিন খেলবেন এই অজি তারকা।
গত বছরের শেষ দিকে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। ওয়ানডেকেও বিদায় জানান অল্প কয়েকদিন আগে। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাই ছেড়ে দিলেন ওয়াটন।
২০০২ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় ওয়াটসনের। ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম স্বর্ণযুগের সদস্য। যেখানে তিনি খেলেছেন গ্লেন ম্যাকগ্রা, রিকি পন্টিং, শেন ওয়ার্ন ও অ্যাডাম গিলক্রিস্ট পাশে।
১৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩টি বিশ্বকাপে খেলেছেন ওয়াটসন। জিতেছেন দুটিতে (২০০৭ ও ২০১৫)। এছাড়া ২০০৬ ও ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ও তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫৯টি টেস্ট খেলে ৩৫ দশমিক ১৯ গড়ে রান করেছেন ৩ হাজার ৭৩১। সেঞ্চুরি চারটি, সর্বোচ্চ স্কোর ১৭৬ রান। বল হাতে উইকেট পেয়েছেন ৭৫টি।
১৯০ ওয়ানডেতে ৪০’র বেশি গড়ে রান করেছেন ৫ হাজার ৭৫৭। এখানে শতরান ৯টি। ওয়ানডেতে উইকেট পেয়েছেন ১৬৮টি।
ক্যারিয়ারের ৫৭ টি-টুয়েন্টি ম্যাচে ২৮ গড়ে রান করেছেন ১ হাজার ৪১৮। সেঞ্চুরি করেছেন একটি। টি-টুয়েন্টি ৪৮টি উইকেট পেয়েছেন তিনি।