আরো একবার ধামাকার অপেক্ষা
দর্শকের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিলো ‘অপারেশন সুন্দরবন’ এর টিজার। বড়পর্দায় ঈদুল আযহায় মুক্তি…
‘সুন্দরবন আমাদের বহুবার বাঁচিয়েছে, এবার আমরা সুন্দরবনকে বাঁচাবো।’- ‘অপারেশন সুন্দরবন’ এর প্রায় দেড় মিনিটের টিজারের মূল কথা এটাই, মূলত পুরো সিনেমাটিই যেন এই কথার উপর ভিত্তি করে!
সুন্দরবনকে জলদস্যু শূন্য করার অভিযানে অংশ নেয়া র্যাব (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) সদস্যদের মূল মন্ত্রই যেন ছিলো এমন! সেই বাস্তব ঘটনা আসতে চলেছে এবার সিনেমার পর্দায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুক্তি দেয়া হয় বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ছবিগুলোর একটি ‘অপারেশন সুন্দরবন’ এর টিজার। ব্যয়বহুল এই সিনেমাটির টিজার প্রকাশ অনুষ্ঠানে জমকালো আয়োজন করে র্যাব ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড।
রাজধানীর আর্মি গল্ফ ক্লাবে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ারসহ পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছিলেন সিনেমার নির্মাতা দীপংকর দীপন সহ ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সংশ্লিষ্ট অভিনেতা ও কলাকুশলী সহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুন্দরবনে র্যাবের দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পেছনের গল্প শোনান বেনজীর আহমেদ। এতো কম বাজেটে এমন অসাধারণ সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ কীভাবে সম্ভব হয়েছে, সেই গল্পও শোনান তিনি। নির্মাতা দীপংকর দীপনসহ, র্যাব সদস্য ও সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান বেনজীর।
এদিকে দেড় মিনিটের টিজারে ফুটে উঠে শান্ত কোমল সুন্দরবনের ভয়ঙ্কর রূপ! জলদস্যুরা সুন্দরবনকে কীভাবে ব্যবহার করতো, জেলেদের উপর দস্যুদের অত্যাচারের গল্পের কিছুটা আভাস রাখা হয় টিজারে। ভয়ঙ্কর নৃশংসতা দিয়ে টিজারের শুরু।
রহস্যে ঘেরা সুন্দরবনকে টিজারে সংজ্ঞায়িত করা হয় এভাবে, ‘এই শান্তভাবটা সুন্দরবনের লোক দেখানো। এই বন আসলেই খুব বিপজ্জনক।’ কিংবা ‘সুন্দরবন খুবই রহস্যজনক, এখানে সবই সম্ভব।’
সুন্দরবনের জলদস্যু দমনে আত্যোৎসর্গকৃত র্যাব সদস্য পি.সি. কাঞ্চন আলী সহ অন্যান্য অভিযানে র্যাবের ২৮ জন অকুতোভয় বীর শহীদের স্মরণে উৎসর্গকৃত টিজারটিতে ভিন্ন লুকে দেখা যায় চিত্রনায়ক রিয়াজ, সিয়াম আহমেদ, তাহসিন ও চিত্রনায়ক রোশানকে। বাঘ গবেষক হিসেবে এক নজর দেখা যায় সময়ের আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকেও।
এরইমধ্যে টিজারটি প্রকাশের পর প্রশংসা করছেন সাধারণ দর্শকও। কেউ কেউ গুনে মানে ভিনদেশি ছবির সঙ্গেও তুলনা করতে শুরু করে দিয়েছেন। বলছেন, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এর পর আবারও ধামাকা দেখাতে পারেন নির্মাতা দীপংকর দীপন। এখন শুধু অপেক্ষা ঈদুল আযহার, কারণ ‘অপারেশন সুন্দরবন’ মুক্তির জন্য ঈদুল আযহাকেই বেছে নিয়েছেন নির্মাতা।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে একসময় জলদস্যুদের অবাধ বিচরণ ছিল। ফলে সুন্দরবন ছিল সাধারণ মানুষের জন্য ভয়ের এক জায়গা। এমনকি সুন্দরবনের জেলে, মৌয়ালও জীবিকা নির্বাহের জন্য মাছ ধরতে ও মধু সংগ্রহ করতে পারত না। এখন সুন্দরবন দস্যুশূন্য। র্যাবের চৌকষ বাহিনীর একের পর এক অভিযানে সুন্দরবন হয়েছে দস্যুহীন।
র্যাবের এই দুঃসাহসিক অভিযানকে উপজীব্য করেই নির্মিত হয়েছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’। চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছে র্যাব ফোর্সেস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের অনুপ্রেরণায় লিগ্যাল মিডিয়ার তত্বাবধানে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। র্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন চলচ্চিত্রটি নির্মাণে সহায়তা প্রদান করেছেন বলে আগেই জানিয়েছেন নির্মাতা দীপন।
ছবিটির প্রস্তুতিপর্বের কথা জানিয়ে দীপংকর দীপন সেসময় চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, আঠারো মাস আমি ‘অপারেশন সুন্দরবন’ নিয়ে কাজ করেছি। গবেষণা করেছি চলচ্চিত্রটি কী রকম হতে পারে, জলদস্যু থেকে শুরু করে নানা বিষয়গুলো কীভাবে আসতে পারে! সুন্দরবনের গল্প একটি মহাকাব্যিক আখ্যানের মতো। নানা অ্যাঙ্গেল যুক্ত হয়েছে এখানে। জলদস্যুদের অ্যাঙ্গেল, মাছ ব্যবসায়ীদের অ্যাঙ্গেল, ট্রলার ব্যবসায়ীদের অ্যাঙ্গেল, অস্ত্র ব্যবসায়ীদের অ্যাঙ্গেল, এই অঞ্চলের বাঘ গবেষণাকারীদের অ্যাঙ্গেল এবং ভিক্টিম হিসেবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির অ্যাঙ্গেল। শুধু তাই নয়, আমাদের গবেষণায় এমন একটি বিষয়ের কথা উঠে এসেছে যা আমরা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
‘অপারেশন সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে আরো অভিনয় করছেন শতাব্দী ওয়াদুদ, মনির খান শিমুল, মনোজ প্রামানিক, দীপু ইমাম, এহসানুর রহমান প্রমুখ।