ইউরোপের মতো অভিবাসী সংকটের মুখে আছে যুক্তরাষ্ট্রও। যুদ্ধবিধ্বস্ত এশিয়া-আফ্রিকার না হলেও মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের চাপে সংকটে মার্কিন সীমান্ত। এসব অভিবাসীদের মধ্যে অনেক শিশুও আছে। এদের অনেককেই আটক করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
আইন আর সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বন্দুক উপেক্ষা করে গত দুই বছরে মার্কিন মুলুকে সবচেয়ে বেশি অভিবাসী এসেছে হন্ডুরাস, এল সালভাদর ও গুয়েতেমালা থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পরিসংখ্যান দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত শিশুসহ প্রায় ৮০ হাজার অভিবাসীকে আটক করেছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে গিয়ে অনেককেই সবকিছু হারাতে হয়েছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কেউ কেউ ছাড়া পেলেও অনেককেই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করতে হয়েছে। আর নারীদের হতে হচ্ছে যৌনদাসী।
মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক দুরাবস্থা এবং সরকারগুলো সেটা মোকাবেলা করার অক্ষমতার কারণেই বহু তরুণ উত্তর আমেরিকায় পাড়ি দিচ্ছে। এদের কেউ কেউ অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত জীবনের মোহ ছেড়ে আবার পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন।
এই অভিবাসী সংকট এখন এতো প্রকট যে মার্কিন কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য সতর্ক বার্তা জারি করা হয়েছে। সংকট মোকাবেলার জন্য ১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে।
তহবিল ঘোষণা এবং অনুমোদনের পর যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী প্রবেশ কিছুটা কমে যায়। সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্তে মারাত্মক কড়াকড়ি আরোপ করেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, একমাত্র সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমেই এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
তবে অনেক বিশ্লেষক এই যুক্তি মানতে নারাজ। তারা বলছেন, সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে সবসময় অভিবাসী সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হয় না।
উত্তর সীমান্তে অভিবাসী প্রবেশ কিছুটা কমলেও আবার দক্ষিণে মেক্সিকো সীমান্তে এটা বেড়ে গেছে। ভয়-ডর উপেক্ষা করে অনেক মধ্য আমেরিকান তরুণই যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে।
ল্যাটিন আমেরিকার তথ্য উল্লেখ করে ওয়াশিংটন অফিস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মেক্সিকো সীমান্ত বাহিনী মধ্য আমেরিকার ৯২ হাজার অভিবাসীকে আটক করেছে। আর একই সময়ে মার্কিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী আটক করে ৭০ হাজার ৪৪৮ জন মধ্য আমেরিকান অভিবাসীকে।