চলচ্চিত্রের প্রবীণ ক্যামেরাম্যান (স্থিরচিত্র গ্রাহক) মো. মনির উদ্দিন মারা গেছেন। শুক্রবার রাত আড়াইটা নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গুণী এই ক্যামেরাম্যানের মৃত্যুর খবর চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মুনমুন।
তিনি জানান, শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে মনির ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
রাজধানীর উত্তরায় মুনমুনের বাসার উপরের তলায় মনির উদ্দিন তার মেয়ের বাসাতেই দীর্ঘদিন থেকেছেন। কদিন আগে পঞ্চগড় গিয়েছিলেন মনির। উদ্দেশ্য ছিল সেখানে কিছু জমিজমা বিক্রি করে চিকিৎসা চালানো। গতরাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান মুনমুন। বলেন, আজ দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।
চ্যালেন আই অনলাইনকে মুনমুন বলেন, আমাদের মনির ভাই উন্নত চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন। তার চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হতো। প্রথমদিকে চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে পারলেও পরবর্তীতে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে অপারগ হয়ে পড়েন। একপযার্যে গাজীপুরে জমি বিক্রি করে তার চিকিৎসা করানো হয়। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। আমি নিজেও যা পেরেছি তাই দিয়ে তার সাহায্য করেছি।
কয়েক বছর ধরে মনির ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। গেল বছর শুরু থেকে নতুন করে চোখের সমস্যায় ভুগেছেন মনির। বাম চোখে আগে কম দেখলেও পরে ডান চোখেও সমস্যা দেখা দেয়। পরে মনির উদ্দিন দু-চোখ অকার্যকর হয়ে পড়ে।
গতবছর মানসিকভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন মনির। মুনমুন জানান, তিনি চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে মনির অসুস্থতার বিষয় জানিয়েছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রের মানুষদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাপোর্ট পায়নি মনির।
চিত্রপরিচালক উত্তম আকাশের বেশিরভাগ ছবির ক্যামেরাম্যান ছিলেন মনির উদ্দিন। ১৯৮৯ সালে চিত্রপরিচালক এহতেশামের ‘মৌমাছি’ ছবিতে প্রথম ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করেন মনির উদ্দিন। এরপর ‘আমার জান’, ‘হিরা মতি’, ‘ঢাকাইয়া পোলা বরিশাল্ল্যাইয়া মেয়ে’, ‘মুক্তির সংগ্রাম’ ছাড়াও দুই শতাধিক ছবির ক্যামেরাম্যান ছিলেন তিনি।