চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘আমরা দুর্ভাগা জাতি, নিজেরাই খাবারে বিষ মিশাই’

বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট স্থাপনের কাজের অগ্রগতি জানতে গিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বলেছেন, আমরা এমন এক দুর্ভাগা জাতি, যারা নিজেরাই নিজের খাবারে ভেজাল আর কেমিক্যাল নামের বিষ মিশাই।

বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আইন কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী আদালতে হাজির হন আমদানি করা ফলে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট না বসানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে।

সেসময় বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আইন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে কিডনি সমস্যায় ভোগা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। ভেজাল ফলমূল আর খাবার খেয়ে মানুষের কিডনি শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

‘‘আমাদের ব্যবসায়ীরা খাবারে ভেজাল-কেমিক্যাল মেশায়। আমরা এমন এক দুর্ভাগা জাতি যারা নিজেরাই নিজেদের খাবারে ভেজাল আর কেমিক্যাল নামক বিষ মিশাই।’’

এনবিআরের আইন কর্মকর্তা তখন আদালতকে জানান, ‘দেশের ১৩টি বন্দরের মধ্যে ৪টিতে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট রয়েছে। অন্য বন্দরগুলোতে বসাতে একটু সময় লাগবে।’

আদালত বলেন, ‘আর কত বছর সময় নিবেন? জনগণ আর কতদিন এরকম কেমিক্যালযুক্ত ফল খাবে? জনগণকে জিম্মি করা চলবে না। জনগণের স্বাস্থ্যগত দিকটিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাই যে সকল বন্দরে এখনো কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট নেই, অতি দ্রুত সেসব বন্দরে টেস্টিং ইউনিট স্থাপন করতে হবে। আপাতত এসব বন্দরে বিএসটিআই এর সহযোগিতায় আমাদানি করা ফলের টেস্টিং করতে হবে।’

এ বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দিয়ে পরবর্তীতে আদেশের জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এদিন আদালতে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আর বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সরকার এম আর হাসান।

ফলে রাসায়নিকের প্রয়োগ রোধে এইচআরপিবির করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। সেই রায়ে দেশের জল-স্থল বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট স্থাপন করতে বলা হয়।