প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেনের উন্নত চিকিৎসার্থে বিদেশে নেয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে বর্তমান সরকার। বুধবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমজাদ হোসেনকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেন, আমজাদ হোসেনের অবস্থার শুরুতে অত্যন্ত শঙ্কাপূর্ণ ছিল। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আজ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আর এক্ষেত্রে তার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব সরকার বহন করবে।
এ সময় আমজাদ হোসেনের ছোট ছেলে নির্মাতা ও অভিনেতা সোহেল আরমান সাংবাদিকদের জানান, গতকালকে প্রধানমন্ত্রী যখন আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন বা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তখন থেকে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে এবং এই হাসপাতালে চিকিৎসকদের সহায়তায় বাবাকে বিদেশে পাঠানো যায় কিনা সে চেষ্টা করছিলাম।
সে কারণে আমরা ব্যাংককের বিভিন্ন হাসপাতালে যোগাযোগ করেছি। তাদের সঙ্গে মেইল আদান-প্রদান চলছে। তারা বলেছে যদি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে তারা এক্সেপ্ট করবে। ব্যাংককে যেতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আমাদের দু’ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় লাগবে। আমরা ব্যাংককের বামরুন গ্রাথ হাসপাতালে একটি ফিরতি মেইল এর অপেক্ষায় আছি। সেখানে শারমিন নামে একজন বাঙ্গালদেশি মেয়ে কর্মরত আছেন। তিনি যথেষ্ট চেষ্টা করছেন। বামরুন গ্রাথ হাসপাতালটি কনফার্ম করলেই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাবো।
সোহেল আরমান বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সময়ে এসেও বাবাকে দেখে গেছেন, তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন এটা বাবার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
আমজাদ হোসেনের চিকিৎসার বিষয়ে ইমপালস হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. জহির আল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, আমজেদ হোসেন এই হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন, লাইফ সাপোর্টে। উনি একটি ম্যাসিভ স্ট্রোক নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এবং দেরী করে হাসপাতালে এসেছিলেন বলে অবস্থা যথেষ্ট সংকটাপন্ন ছিল। আমরা শুধুমাত্র সাপোর্টিভ চিকিৎসা দিয়েছি। এখনও উনার হার্টের সমস্যা রয়েছে। আমরা চিকিৎসা বোর্ড করে ওনার চিকিৎসা সম্পন্ন করছি।
এছাড়া উনার চিকিৎসার বিষয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অন্যতম হাসপাতালটির সিনিয়র কনসালটেন্ট সহকারী অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ বলেন, হাসপাতালে দেরি করে আসার জন্য প্রথম দিন উনার স্ট্রোকের জন্য যে চিকিৎসা সেটা আমাদের দেওয়া সম্ভব হয়নি। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ৭২ ঘন্টার আগে কোন কিছুই বলা সম্ভব হবে না। সেই ৭২ ঘণ্টা পার হয়েছে। বর্তমানে ওনার অবস্থা ভালো বলা যাবে না। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশে নেওয়ার মতো স্থিতিশীল তিনি হয়েছেন।
গত রবিবার সকালে নিজ বাসভবনে আমজাদ হোসেন ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন থেকেই তিনি আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। আজ (বুধবার) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাড়াও আমজাদ হোসেনকে বিকেলে দেখতে এসেছিলেন সুচন্দা, ববিতা ও চম্পা।