চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আবেগের বশে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলাম: ফেরদৌস

‘ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল’

বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে দেশটিতে ব্যাপকভাবে তোপের মুখে পড়েন। এমনকি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তার ভিসা বাতিল করে মঙ্গলবার রাতে তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এমনটা ঘটে যাবে নায়ক ফেরদৌস ভুলেও টের পাননি। তার দাবি, পূর্ব পরিকল্পিত নয়। বরং আবেগের বশে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন।

শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশের মানুষের কাছেও ফেরদৌস সমালোচিত হচ্ছেন গত দুদিন ধরে। এসব নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে পাঠানো বিবৃতিতে তার অবস্থান পরিস্কার করেছেন ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ খ্যাত এই নায়ক। তার কথাগুলো হুবুহু তুলে ধরা হলো :

আমি চিত্রনায়ক ফেরদৌস। অভিনয় শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয় শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সকলের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভাল লাগে আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি।

পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। এখানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু। যাদের সাথে আমি সবসময়ে হৃদ্যতা অনুভব করি। এজন্য বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আমি এখানে চলে আসি।

ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সাড়া বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সকলের মতো আমারও আগ্রহের জায়াগায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবাগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সাথে অংশগ্রহণ করি। এটা পূর্বপরিকল্পনার কোন অংশ ছিল না। শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি।

কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোন বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগ তাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সাথে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল।

যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন। আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনভাবেই ঔচিত্য নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

প্রসঙ্গত, ভারতের রায়গঞ্জের প্রার্থী কানাইয়ালালের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন ফেরদৌস। এই ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করে বিজেপি। এরপর মডেল কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার অভিযোগে ভারতীয় ভিসা বাতিল করে তাকে দেশে ফিরতে বলে বাংলাদেশ হাইকমিশন।