চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আবার গ্যাস রপ্তানির সুযোগ পেল বিদেশী কোম্পানি

আবারো বিদেশী কোম্পানিকে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ করে দেয়া হলো। প্রায় আট বছর পর নতুন করে এই সুযোগ পেতে যাচ্ছে অষ্ট্রেলিয়ার কোম্পানি সান্তোষ। এখন থেকে সমুদ্রে অন্য যেসব বিদেশী কোম্পানির সাথে চুক্তি হবে তাদেরও এই সুযোগ দেয়া হবে।

পেট্রোবাংলাকে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দিয়ে সান্তোষের সাথে চুক্তি করতে বুধবার নীতিগত অনুমতি দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে পেট্রোবাংলা এই চুক্তি সম্পাদন করবে।

বঙ্গোপসাগরের ১৬ নম্বর ব্লক অর্থাৎ মগনামায় যৌথভাবে খনিজ অনুসন্ধান করবে অষ্ট্রেলিয়ার বহুজাতিক কোম্পানি সান্তোস ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স। এখানে গ্যাস পেলে তা রপ্তানি করতে পারবে সান্তোষ। তবে উত্তোলিত তেল-গ্যাস প্রথমে পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রির প্রস্তাব দিতে হবে। পেট্রোবাংলা তা কিনতে অপারগতা প্রকাশ করলে বাংলাদেশের মধ্যেই তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছে ওই গ্যাস বিক্রি করতে পারবে তারা। যদি তৃতীয় পক্ষও তা না কেনে তখন সেই গ্যাস বিদেশে রপ্তানি করতে পারবে সান্তোস।

জ্বালানি বিভাগ বলছে, বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ জ্বালানি ঘাটতির দেশ। তাই বিদেশী কোম্পানির কখনই গ্যাস রপ্তানির প্রয়োজন হবে না। পেট্রোবাংলাই সব গ্যাস নিয়ে নেবে। শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য এই সুযোগ রাখা হয়েছে।

গ্যাস রপ্তানির বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস রপ্তানির প্রয়োজন না হলেও এই ধরণের সুযোগ থাকায় বিদেশী কোম্পানি পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রির দাবি করতে পারে। তাছাড়া বেশি গ্যাস পেলে তখন রপ্তানির প্রশ্ন উঠবে। আর সান্তোষের যে সুযোগ দেয়া হলো, তা এখন অন্য কোম্পানিগুলোকেও দিতে হবে। ফলে সমুদ্রে যখন বেশি বেশি গ্যাস পাওয়া যাবে তখন দ্রুত মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য বিদেশী কোম্পানি গ্যাস রপ্তানি করতে চাইবে।

২০০৮ সালের উৎপাদন অংশীদারী চুক্তিতে (পিএসসি) বিদেশী কোম্পানির জন্য গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দেয়া হয়েছিল। পরে ২০১২ সালে যখন আবার নতুন করে সমুদ্রের ব্লক ইজারা দেয়া হয় তখন রপ্তানির সুযোগ বন্ধ রাখা হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশের গ্যাস কোনভাবেই রপ্তানির সুযোগ ছিল না। ২০০৮ সালের অনুকরণে নতুন করে আবার গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখা হলো।

এর আগে অবশ্য পাইপলাইন নয়, তরল গ্যাস বোতলজাত করে তা রপ্তানির সুযোগ রাখার বিষয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু ২০১২ সালের পিএসসিতে সে সুযোগও রাখা হয়নি। সমুদ্রে গ্যাস পেলে তা অবশ্যই দেশের মধ্যে বিক্রি করতে হবে। পেট্রোবাংলা না নিলে দেশের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ ছিল।

উচ্চ আদালতেরও গ্যাস রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। গ্যাস রপ্তানির সুযোগ দিয়ে চুক্তির জন্য পেট্রোবাংলার প্রস্তাব জ্বালানি বিভাগ আইন মন্ত্রনালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রনালয়ের পর্যালোচনা শেষে জ্বালানি বিভাগ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠায়। এরপর কমিটি তা অনুমোদন করে।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা বলছে, জ্বালানি বিভাগ থেকে অনুমোদনের কাগজ পেলেই চুক্তির উদ্যোগ নেয়া হবে।

এরআগে মগনামায় অনুসন্ধান কূপ-২ খনন করতে সান্তোস বাংলাদেশ লিমিটেড (এসবিএল) বাপেক্সকে সাথে নিয়ে যৌথভাবে কূপ খননের প্রস্তাব দেয়। সে অনুযায়ি ৪৯ ভাগের অংশীদার হয়েছে বাপেক্স। এতে বাপেক্স দুই হাজার ৩০৮ মিলিয়ন ডলার বা ২৩০ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে।