বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ১১ জনের মধ্যে দু’জন পলাতক আছেন।
ইতোমধ্যে তদন্তকাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার মাত্র ৫ সপ্তাহের মাথায় হত্যাকাণ্ডে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
বুধবার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ সদস্যরা আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মোট ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি ১৯ জনের বাইরে ঘটনার তথ্য প্রমাণে আরো ৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহার বহির্ভুত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অর্থাৎ এ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পলাতক রয়েছেন ৪ জন।
গ্রেপ্তার ২১ জনের মধ্যে ৮ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দি, স্বাক্ষ্য-প্রমান, সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ২৫ জনের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
চার্জশিটে ৩১ জনকে স্বাক্ষী রাখা হয়েছে। এর মধ্যে শেরেবাংলা হলের ক্যান্টিন বয়, মৃত ঘোষণাকারী চিকিৎসক, সিকিউরিটি গার্ড, আবরারকে হাসপাতালে যারা নিয়ে গেছেন তারা, হল প্রভোষ্ট এবং হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অন্যতম।
পলাতক চারজন হলেন: ইইই ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ১৭তম ব্যাচের তানিম, মেকানিক্যাল ১৭তম ব্যাচের মোর্শেদ ও কেমিক্যাল ১৬তম ব্যাচের মুজতবা রাফিদ।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ, তথ্যপ্রমাণ ও স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতে আবরার ফাহাদকে মারধরের সঙ্গে সরাসরি ১১ জন জড়িত ছিলেন। বাকিরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ঘটনার পরিকল্পনা এবং নির্দেশনার সঙ্গে কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ত।
তদন্ত সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, আবরার ফাহাদকে সরাসরি মারধরে যে ১১ জন অংশ নেন তারা হচ্ছেন: বুয়েট ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৩তম ব্যাচের মেহেদী হাসান রাসেল, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৪তম ব্যাচের মুহতাসিম ফুয়াদ, ১৫তম ব্যাচের অনিক সরকার, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের মেহেদী হাসান রবিন, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ইফতি মোশারফ হোসেন সকাল, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ত্রিপলই বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মো. জিসান, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শামীম বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের তানিম, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শামসুল আরেফিন রাফাত ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মুনতাসির আল জেমি। এই ১১ জনের মধ্যে জিসান ও তানিম পলাতক রয়েছেন।