ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানদের হাতে। তালেবানরা ক্ষমতায় বসার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন- আবারও কি অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে দেশটি? বিনোদন শিল্পের কী হবে?
২০ বছর আগের তালেবান সরকার আফগানিস্তানে মানবাধিকারের কোনো তোয়াক্কা করেনি, নারী শিক্ষা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। তালেবান শাসনামলে কঠোর শরিয়া আইন চালু করায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সিনেমা, অভিনয়, গান। তাই আফগানিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পুরো বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীরা।
আবারও তালেবানের উত্থানে ২০০১ থেকে শিল্পী ও নির্মাতাদের হাতে তিলে তিলে গড়ে তোলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়। লিনা আলম, আমিনা জাফারি, মারিনা গুলবাহারির মতো শক্ত অবস্থান করে নেয়া অভিনেত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় গোটা বিশ্ব।
আফগানিস্তানের প্রথম নারী পরিচালক সাবা সাহার। প্রতিকূলতার মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছেন বিশ্ব দরবারে।
২০০৩ সালের আফগান চলচ্চিত্র ‘ওসামা’ পেয়েছিল গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। ‘বুজকাশি বয়েজ’ মনোনয়ন পেয়েছিল অস্কারে। ‘অ্যা লেটার টু দ্য প্রেসিডেন্ট’ পুরো বিশ্বে সাড়া ফেলেছিল।
যুদ্ধের কারণে অনেক নির্মাতাই দেশ ছেড়েছেন বিভিন্ন সময়ে। আফগানিস্তানের বাইরে থেকে সিনেমা নির্মাণ করেছেন। আফগানিস্তানের বাইরে তৈরি সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম রাশিয়ায় তৈরি ‘শিরিন গুল-ও-শির আগা’, ‘ফরেইন ল্যান্ড’, ‘লুরি’, ‘শেরাঘাই দাঘালবাজ’, ‘ইন দ্য রং হ্যান্ডস’, ‘শেড অব ফায়ার।’ আমেরিকায় তৈরি হয়েছে ‘আল কারিম’। পাকিস্তানে তৈরি হয়েছে ‘শেকাস্ত’ এবং ইতালিতে তৈরি হয়েছে ‘গ্রিদামি।’
আফগান চলচ্চিত্রের নারী পরিচালক সাহরা করিমি চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ এবং নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘নির্মাতা হিসেবে পরিচয় গড়ে তুলতে অনেক ঝুঁকি নিয়েছি ও পরিশ্রম করেছি। তালেবানরা ক্ষমতায় থাকলে তারা সব শিল্প নিষিদ্ধ করে দেবে। আমি সহ অন্য নির্মাতারা তাদের হত্যার তালিকায় আছি।’ একই বক্তব্য কানজয়ী আফগান নির্মাতা শাহরবানু সাদাতেরও। তিনি প্রাণ ভয়ে পরিবার নিয়ে আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছেন।
২০ বছর পর আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার সাথে সাথেই সেখানে অস্থিরতা তৈরি হয়। রোববার পুরোপুরি দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবানরা। সবার আশঙ্কা, ২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানে যেসব মানবাধিকার অর্জন করা গিয়েছিল এখন তা আবার হারিয়ে যাবে।