বেতন না হওয়ায় মানবেতর কষ্টে দিন পার করছেন রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেটের আনন্দ ছন্দ সিনেমা হলের ৩৫ জন কর্মচারীর অনেকেই। অভাবের তাড়নায় এদের মধ্যে দু’জন আত্মহননের পথও বেছে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ২৩ এপ্রিল সেইসব কর্মীদের দুরাবস্থা নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছিল চ্যানেল আই অনলাইনে। প্রতিবেদনটি নজরে আসে ‘মিসেস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ মুনজারিন অবনীর।
বিষয়টি আমলে নিয়ে অবনী তার নিজের ‘মুনজারিন অবনী ফাউন্ডেশন’-এর তরফ থেকে আনন্দ-ছন্দ সিনেমা হলের ২৫ জন কর্মচারীর নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে পাশে দাঁড়ান।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) চাল, ডাল, আলু, খেজুরসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সিনেমা হলের ম্যানেজার মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের মাধ্যমে বিতরণ করেন বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন অবনী।
হলটির ম্যানেজার জানান, বুধবার দুপুরে ৩৫ জন কর্মচারীর মধ্যে একেবারেই অসচ্ছল ২৫ জন কর্মচারীর হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কর্মচারী কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট ৪০ জন স্টাফ। সবার সমস্যা এক না। অবনী আপা ও তার ফাউন্ডেশন থেকে পাঠানো খাদ্য সামগ্রী একেবারে দুঃস্থ মানুষগুলোকে দিয়েছি। আলাদাভাবে আরও একটি বেসরকারি কোম্পানি কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। দেশের এই চরম বিপদে মধ্যস্থতা করার জন্য ‘মুনজারিন অবনী ফাউন্ডেশন’ এবং ওই কোম্পানির কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।
এদিকে করোনাভাইরাসে এপ্রিলের শুরু থেকে রাজধানীর তেজগাঁও, বেগুনবাড়ি, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার অসচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে ‘মুনজারিন অবনী ফাউন্ডেশন’। রংপুর, সিরাজগঞ্জ, বি-বাড়িয়াতেও এ ফাউন্ডেশন মানুষকে সয়াহতা করছে। এমনকি সম্প্রতি এটিএম বুথে কর্তব্যরত ৩০ জন নিরাপত্তাকর্মীকে ১৫ দিনের ইফতার ও শুকনা খাবার দিয়েছে সংগঠনটি।
‘মুনজারিন অবনী ফাউন্ডেশন’ প্রসঙ্গে অবনী বলেন, সত্যিকারের বিপদগ্রস্ত মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। চ্যানেল আই অনলাইনে সিনেমা হলের কর্মীদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটা রিপোর্ট দেখে খারাপ লাগে। এরপরেই আমার ফাউন্ডেশন থেকে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। চারপাশে কষ্টে থাকা মানুষগুলো ভালো থাকবে যদি আমরা এখন তাদের পাশে দাঁড়াই। আমি আমার দিক থেকে চেষ্টা করেছি। এভাবে পাশে থেকেই আমরা এই যুদ্ধ জয় করতে পারব।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় ‘মিসেস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হন মুনজারিন অবনী। ডিসেম্বরে অবনী বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে প্রথমবার মার্কিন মুলুকের লাস ভেগাসে ‘মিসেস ওয়ার্ল্ড’-এর চূড়ান্ত মঞ্চে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর নির্বাচিত হন। অবনী বলেন, মিসেস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ হওয়ার পরেই বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়ার্ক শুরু করি।
চলতি বছরের শুরু থেকে এই ফাউন্ডেশনের কাজ করেন জানিয়ে অবনী বলেন, মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রান্তিক মানুষের শিক্ষা ও খাদ্য চাহিদা নিশ্চিত করা। এখন করোনার মধ্যেই খাদ্য সংকট প্রকট। তাই আমার ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে খাবার দিয়েই পাশে থাকার চেষ্টা করছি। করোনার মধ্যে এখন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ’শ পরিবারের পাশে থাকতে পেরেছি। অবস্থা ভালো হলে তখন আবার শিক্ষা বিস্তারে বিভিন্ন কাজ করবো।