নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। অসন্তোষ প্রকাশ করার পাশাপাশি আদালত প্রশ্ন রেখেছে: তাহলে ওই ঘটনা কে ঘটালো?
পুলিশের দাবি, জবানবন্দিতে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বলেছেন, তিনি এবং সেলিম ওসমান ঘটনার শিকার। কিন্তু, আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, শিক্ষকের বক্তব্য জানতে কোনো পুলিশ সদস্য যোগাযোগই করেনি। সব শুনে ১০ আগষ্ট আদেশের দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় রুল জারির পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বন্দর থানার ওসিকে প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসকের পর পুলিশের পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।
ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে শ্যামল কান্তি ভক্তসহ ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, সেখানে তারা বলেছেন শ্যামল কান্তি ভক্ত ও সেলিম ওসমান দুজনেই পরিস্থিতির শিকার। জনতার দাবিতেই ওই ঘটনা ঘটেছিলো, তবে কি নির্দেশ দিয়েছিলো সেই বিষয়ে কিছু লেখা নেই।
‘শ্যামল কান্তিও বলেছেন, তিনি ও নিজে ও শামীম ওসমান পরিস্থিতির শিকার। এবং উনিসহ অন্যরা বলেছেন, কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আদালতেও যাবেন না।’
পুলিশের প্রতিবেদন পেয়ে ওই প্রতিবেদন নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আবেদনকারী ও সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আইনজীবী এম কে রহমান জানান, কোর্ট বলেছেন তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে যে ছবি ও নিউজ এসেছে সেটা কি? সেটার মাস্টারমাইন্ড কে? আমরা রুল জারি করলাম সেই বিষয়েও কিছু বলা হয়নি। কোর্ট এই প্রতিবেদন নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। কোর্ট ১০ আগস্ট আদেশের দিন ঠিক করেছেন।
সেসময় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী শিক্ষকের জবানবন্দি বিষয়ে আদালতকে নতুন তথ্য দেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, আমরা শ্যামল কান্তির সঙ্গে দেখা করেছি। উনি বলেছেন, তদন্তের কাজে কোনো পুলিশ অফিসার তার সঙ্গে দেখাই করেনি। কখন কোথায় কি নিউজ এসেছে সেসব আমরা এফিডেবিট করে কোর্টের কাছে জমা দিয়েছি। এই প্রতিবেদন দেখার পর সবার একটাই প্রশ্ন ছিলো, তাহলে ঘটনা ঘটালো কে? সেটা জানার জন্য পুলিশ যে পর্যাপ্ত নয় তা এই রিপোর্ট থেকেই জানা গেলো। এখন কোর্ট বলছেন জুডিশিয়ালি ইনকোয়ারি ছাড়া উপায় নাই। আমরাও সেক্ষেত্রে একমত।
শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় তাই বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র।