মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের সঙ্গে মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামের সংশ্লেষ ও উগ্রপন্থা থেকে তরুণদের ফেরানোর নানা উপায় নিয়ে ‘সংলাপসূত্র’ নামে একটি সংগঠনের সংলাপে বিশিষ্টজনরা বলেছেন, আজকের সমাজ প্রতিবাদহীন সমাজ। নারী নির্যাতন, আদিবাসী নির্যাতন-নিপীড়নের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে প্রতিবাদহীনতা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র নয়। উনসত্তর, একাত্তর কিংবা গণজাগরণের সময় তরুণরা যেভাবে রাজপথে নেমে এসেছিল, সেই চেতনা নিয়ে তরুণ সমাজকে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা। আমরা বিশিষ্টজনদের আহ্বানের সঙ্গে এজন্য একমত যে মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সখ্যের প্রেক্ষাপটে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য আজ অনেকটাই হুমকির মধ্যে আছে বলে আমরা মনে করি। অসাম্পদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। মৌলবাদ যখন সারাবিশ্বের অন্যতম প্রধান সমস্যা তখন মৌলবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা জরুরি। আমাদের দেশে সেই সামাজিক আন্দোলন এখন অনেকটাই দুর্বল। স্বাধীনতার কয়েক বছর না যেতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এভাবে বাংলাদেশকে উল্টোপথে নিয়ে গেছে। কিন্তু মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের সখ্য হওয়ার পরও প্রগতিশীল তরুণ সমাজকে ততোটা সোচ্চার দেখা যায়নি। এ কারণে সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য সরানোর ঘটনার পর মানবাধিকার কর্মী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি সুলতানা কামালের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করে তাকে দেশত্যাগের জন্য হুমকি দেয়ার মতো ধৃষ্টতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে খুব জোরালো কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। এর আগেও এভাবেই সাম্প্রদায়িকতার দিকে রাষ্ট্রের ঝুঁকে যাওয়ার সময় বাধা না দেয়ায় আজ দেশকে এ অবস্থায় এসে দাঁড়াতে হয়েছে। তাই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবীসহ তরুণ সমাজকে সজাগ হতে আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাই।