এক
ছোটবেলায় নানীর বাড়ি আজিমপুর কলোনিতে কেটেছে বেশ কিছুদিন। বাবা – মা ছাড়া আমার দিনগুলো তখন ছিল নিউজপ্রিন্টের মতো বিবর্ণ। সেসব বিবর্ণ দিনের বিকেলে কলোনির কমিউনিটি সেন্টারের বিশাল মাঠে বড়দের সঙ্গে ফুটবল খেলতাম।
ফুটবল মাঠের পাশেই সবুজ লন টেনিস খেলার কোর্ট। ধবধবে ফর্সা রঙের সাহেব-সুবোরা সাদা গেঞ্জি আর সুন্দর সুন্দর হাফ প্যান্ট পড়ে টেনিস খেলতেন। কোর্টের পাশের চেয়ারে থাকত ফলের জুস, বাহারি তোয়ালে। চামড়ার ব্যাগ। কারো কারো সাথে আসত বিদেশি কুকুর ছানা।
টেনিস খেলার বল কখনো কখনো কোর্টের বাইরে চলে আসত। আর চলে এলে আমি সেই ফুটবল খেলা ফেলে দিয়ে টেনিস বল উৎসাহের সঙ্গে তাদের দিকে এগিয়ে দিতাম। টেনিস বল হাতে নিয়ে ভাবতাম আমিও একদিন এদের মতো অনেক বড় সাহেব-সুবো হবো আর সুন্দর সুন্দর গেঞ্জি- প্যান্ট পড়ে বিকেল বেলায় আয়েশি ভঙ্গিতে লন টেনিস খেলব।
পরে বুঝেছি, আমি বড় হয়ে লন টেনিস খেলি- এরকম আশীর্বাদ ভুল করেও আমার কোনো স্বজন কখনো করেনি।
দুই
এখনো পৃথিবীতে এই খেলার চল আছে।
এখনো কোথাও কাউকে লন টেনিস খেলতে দেখলে আমি যতটা না উৎসাহের সঙ্গে খেলা দেখতে থাকি তার চেয়ে বেশি উৎসাহ নিয়ে কোর্টের বাইরে দাড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করতে থাকি বলটা কখন কোর্টের বাইরে চলে যাবে আর আমি ছুটে গিয়ে বিদেশি প্রশিক্ষণ কুকুর যেমন জিনিসপত্র দূরে ছুড়ে দিলে ঠিকঠাক মতো মুখে তুলে নিয়ে এসে মালিকের কাছে নিয়ে আসে সেরকম করে সেই বল কুড়িয়ে নিয়ে তাদের কাছে দিয়ে আসি…