চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আগেরবার জনপ্রিয় এক ক্রিকেটারের অনুরোধে ছাড় পেয়েছিলেন শাহাদত

শিশু গৃহকর্মী হ্যাপির ওপর ক্রিকেটার শাহাদত পরিবারের নির্যাতন এই প্রথম নয়। জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদত হোসেন রাজীব ও তার স্ত্রী নিত্য অনেকদিন ধরেই মেয়েটির ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। চারমাস আগে মিরপুর-৬ এ থাকার সময় প্রতিবেশীরা বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত নিয়ে গেলে আর অত্যাচার হবে না প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটিকে থানা থেকে নিয়ে গিয়েছিলেন শাহাদত।

সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাতীয় দলের একজন তারকা ক্রিকেটার তখন শাহাদতকে সহায়তা করেছিলেন। তবে পরে নোটিশ পেয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন শাহাদত।

চ্যানেল আই অনলাইনের অনুসন্ধানে জানা যায়, চারমাস আগে মিরপুর-৬ এ রকিবুল ইসলাম টুটুলের বাসায় ভাড়া থাকতেন ক্রিকেটার শাহাদত হোসেন। সেসময় বাসার মালিক টুটুলসহ প্রতিবেশীরা মেয়েটির ওপর চলা অমানুষিক নির্যাতন দেখে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

টুটুল বললেন, শিশু গৃহকর্মী হ্যাপির অমানুষিক নির্যাতন চালাতেন শাহাদত ও তার স্ত্রী নিত্য। কোনো অপরাধ ছাড়াই হ্যাপিকে প্রতিনিয়ত লাঠি দিয়ে মারা হতো। লাথি-ঘুষি চড়-থাপ্পর কোনো কিছুই বাদ যেতো না নির্যাতনের তালিকা থেকে।

‘এমন নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পর এলাকার কিছু মানুষ ও আমি থানা পুলিশের কাছে ঘটনা বলি। তখন পল্লবী থানার পুলিশ শাহাদতের বাড়ি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু মেয়েটির গরিব নানী এবং একজন সহ-ক্রিকেটারের সহায়তায় থানা থেকে হ্যাপিকে বাড়ি নিয়ে আসেন শাহাদত।

পুলিশ জানায়, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন ক্রিকেটার তখন শাহাদতের পক্ষে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মেয়েটির ওপর আর অত্যাচার হবে না।

স্বভাবজাত নেতৃত্বগুণের অধিকারী জাতীয় দলের ওই ক্রিকেটার গৃহকর্মী হ্যাপির ঘটনার মতো রুবেল হোসেনের সঙ্গে চিত্রনায়িকা হ্যাপির ঘটনাতেও ইতিবাচক অর্থে হস্তক্ষেপ করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

‘শুধুমাত্র তার জন্য আমরা গৃহকর্মী হ্যাপিকে শাহাদতের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম অন্ততঃ ওই ক্রিকেটারের সম্মানে হলেও মেয়েটির ওপর আর অত্যাচার-নির্যাতন হবে না,’ বলে মন্তব্য করেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

কিন্তু শাহাদতের সাবেক প্রতিবেশীরা বলছেন অন্য কথা।

সাবেক বাড়িঅলা টুটুল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: হ্যাপিকে নিয়ে থানা থেকে ফেরার পরই শাহাদত আমাদেরকে বলেন, কই পুলিশকে বলে তো আমার কিছু করতে পারলেন না!

থানা থেকে নিয়ে আসার পরও শাহাদত দম্পতি হ্যাপির উপর আগের মতোই নির্যাতন চালাতেন বলে তিনি দাবি করেন।

টুটুল জানান, কোনো কারণ ছাড়াই হ্যাপিকে তারা মারধর করতেন। আসলে স্বামী-স্ত্রী দু’জনই খুব উগ্রমেজাজী। কারো সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন না তারা। সারাক্ষণ মেয়েটিকে হয় থাপ্পর নয় লাথি-ঘুষি মারতেন।

‘যখন আমি দেখলাম কোনোভাবেই তাদের থামানো যাচ্ছে না তখন বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদেরকে নোটিশ দিলাম। তারা বাসা ছেড়ে দিলেও মেয়েটির ওপর নির্যাতন যে বন্ধ হয়নি সকালে পত্রিকা পড়েই তা বুঝতে পারছি।’

বর্তমানে নির্যাতিত মেয়েটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পলাতক শাহাদত ও তার স্ত্রী নিত্যকে ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।