চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

আগামীকাল মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনের ইতি ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ৭ম দিনের মতো আগামীকাল মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন ইতি টানার ঘোষণা দিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বুয়েট ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনের ইতি টানলেও আমরা অবশ্যই সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে থাকব, আমাদের যে দাবিগুলো আছে সেগুলো বাস্তবায়ন ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা দেখার জন্য।

এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চার্জশিট দাখিলের পর তার ভিত্তিতে অপরাধীদের একাডেমিকভাবে স্থায়ীভাবে বহিস্কার হওয়ার আগ পর্যন্ত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোন রকম একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিবেন না।

আগামী বুধবার বুয়েটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মিলে এক গণশপথে অংশ নিবেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ১০ দফা দাবি ছিল। এর মধ্যে ৩, ৪, ৫ নম্বর দাবি ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর। ইতিমধ্যে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে, ১৬১ এবং ১৬৪ ধারায় অনেকে জবানবন্দী দিয়েছে। অনেকের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।

এসবের প্রেক্ষিতে আমরা আইন প্রণয়নকারী সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই প্রধানমন্ত্রীকে।

আমাদের বাকি দাবি ছিল বুয়েট প্রশাসনের কাছে- আমরা ৫ টি দাবি তুলে ধরেছিলাম।

ইতিমধ্যে বুয়েট প্রশাসনের তৎপরতা আমরা লক্ষ্য করেছে, জড়িতদের সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে তদন্তের ভিত্তিতে তাদের স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে, যদি নতুন কোন জড়িতদের নাম উঠে আসে তাহলে তাদের স্থায়ী বহিস্কার করা হবে।

ফাহাদের পরিবারকে আর্থিক সহয়তা করা হবে এটাও আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে। বুয়েটে সাংগঠনিকভাবে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে।

এর পাশাপাশি বুয়েটের হলে হলে রাজনৈতিক কক্ষগুলো সিলগালা করা হয়েছে, এমনকি ভিসি স্যার হলে হলে অবৈধ ছাত্রদের উচ্ছেদের কাজ শুরু করেছেন।

আমাদের ৪ নম্বর পয়েন্টে ছিল নির্যাতনের স্বীকার শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করতে পারবে, এটা এরই মধ্যে সংযোগ করা হয়েছে।

এবং ৫ম পয়েন্ট ছিল হলে হলে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন। এরই মধ্যে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। অন্যান্য হলে বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। সিসিটিভি মনিটরিং এর জন্য বুয়েট প্রশাসন থেকে একটা সেল তৈরি করা হোক। এবং সেখানে প্রশাসনিক লোক নিয়োগ করা হোক।

আন্দোলনের ৭ম দিন এসে আমরা শিক্ষার্থীরা বলতে চাই- বিগত কয়েকদিন ধরে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, আবরারের লাশকে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করে আড়ালে অন্তরালে অনেক সংগঠন স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য এজেন্ডা প্রমোট করতে চাচ্ছে। আমদের সাথে তাদের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার কোন সুযোগ আমরা দিতে চাই না। বুয়েট প্রশাসন চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া এবং দৃশমান অগ্রগতি সাধনের মাধ্যেম যে স্বদিচ্ছা এরই মধ্যে দেখিয়েছে, আমরা এই স্বদিচ্ছার প্রতি পূর্ণাঙ্গ শ্রদ্ধা রেখে আগামীকাল আমাদের মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনের আপাতত ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিলাম।