চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ২ বছর অভিবাসী আটকে রাখার রেকর্ড

অস্ট্রেলিয়া অভিবাসী শরণার্থীদের প্রায় দু’বছর ধরে আটকে রাখার নতুন রেকর্ড গড়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে বলছে, দেশটি গড়ে ৬৮৯ দিন শরণার্থীদের আটকে রাখছে।

গবেষক ও শরণার্থী আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিবাসীদের আটক শাস্তি হিসেবে না দেখে বৈধ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা নেয়া উচিত।  বিষয়গুলো স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, দেশটির সেপ্টেম্বরে একটি সরকারি প্রতিবেদনে অভিবাসীদের ৬৮৯ দিন আটকে রাখার বিষয়টি উঠে আসে। যা কিনা নতুন একটি রেকর্ড ও পশ্চিমা দেশের দ্বারা এখন পর্যন্ত বেশি সময়কাল যাবৎ অভিবাসী আটকে রাখে বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে এক হাজার ৪৫৯ জনকে আটক করা হয়েছে, তাদের কতদিন আটকে রাখা হবে তার কোনও সময় উল্লেখ করা হয়নি। অস্ট্রেলিয়া মূলত ট্রলার-নৌকায় আসা অভিবাসীদের বাধ্যতামূলক আটকে রাখে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে,  অস্ট্রেলিয়া কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে ১১৭ জনকে আটক করেছে, যার মধ্যে আটজন লোক যারা ১২ বছরের বেশি সময় বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছে।

পুরুষদের টেনিসে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় সার্বিয়ান সুপারস্টার  নোভাক জোকোভিচকে অস্ট্রেলিয়ার হোটেলে বন্দী রাখার এক মাস পরে এই তথ্যগুলো তুলে ধরল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন ওই হোটেলে আরও ৩২ জন শরণার্থীকেও রাখা হয়েছে।

নোভাক জোকোভিচ জানিয়েছেন, ‘কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হলে আসন্ন ফ্রেঞ্চ ওপেন এবং উইম্বলডন শিরোপাও ত্যাগ করতে তিনি রাজি।’

বিবিসির সাথে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে সার্বিয়ান এই টেনিস সুপারস্টার বলেন তিনি ভ্যাকসিন-বিরোধী আন্দোলনে জড়িত নন, কিন্তু ব্যক্তিগত পছন্দের অধিকারে বিশ্বাসী।

ইরানি এক তরুণ শরণার্থী বলেন, আমার মুক্তির তারিখের কোন সম্ভাবনা ছাড়াই দুই বছর ধরে একই ভবনে আটকে রাখা হয়েছে।

ইরানের মেহেদি আলী বলেন, আমরা স্বাধীনতার জন্য মরিয়া।  ১৫ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে এসেছিলাম, আর এখানে নয় বছর ধরে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ আটকে রেখেছে।  বহু বছর ধরে অনির্দিষ্টকালের আটকে থাকার পরে অনেকে আত্মহত্যাও করেছেন।

গবেষক সোফি ম্যাকনিল বিবিসিকে বলেন, ‘এই পরিসংখ্যানগুলি দেখায় যে বছরের পর বছর ধরে আশ্রয়প্রার্থী এবং শরণার্থীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখার পরিপ্রেক্ষিতে সমমনা দেশগুলির মধ্যে অস্ট্রেলিয়া কতটা একা।’

‘‘আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে, অভিবাসী আটককে শাস্তি হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়, বরং একটি বৈধ লক্ষ্য অর্জনের জন্য শেষ অবলম্বনের একটি ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা হওয়া উচিত,’’ তিনি বলেছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার সরকারী তথ্য বলছে, শরণার্থী আইন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নিয়মগুলিকে স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি বলেও বিবেচনা করা হয়। কারণ  শুধুমাত্র সমুদ্রপথে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এটা প্রযোজ্য।  অবৈধ অভিবাসীদের বেশিরভাগই এমন লোক যারা দেশে উড়ে আসে এবং তাদের স্বল্পমেয়াদী ভিসা শেষ করে থাকে।