ওবামা প্রশাসনের সময়কার শরণার্থী পুনর্বাসন চুক্তির বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী ম্যালকোম টার্নবুলের সাথে ‘সবচেয়ে জঘন্য ফোনালপ’টি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগেও ৪ জন সরকার প্রধানের সাথে ফোনে কথাবার্তার তুলনায় ‘এবারেরটিই সবচেয়ে খারাপ’ ছিলো বলে মন্তব্য ট্রাম্পের। ১ ঘন্টা ব্যাপি এই কথোপকোথন চলার কথা থাকলেও মাত্র ২৫ মিনিট তা স্থায়ী হয়। বিরক্ত ট্রাম্পই ফোন রেখে দেন। তবে এমন ঘটনার বিষয় অস্বীকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার ট্রাম্পের সাথে কথা বলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন টার্নবুল এবং চুক্তিটি সমুন্নত রাখার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সিন স্পাইসারও ট্রাম্প চুক্তি সমুন্নত রাখতে ইচ্ছুক বলে জানায়।
তবে ওয়াশিংটন পোস্টে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ট্রাম্পের বুধবারের টুইটে এই বিষয়ে ঘোর সন্দেহের সৃষ্টি হয়। যেখানে ট্রাম্প বলেন ‘এই নির্বোধ চুক্তির ব্যাপারে জানবেন’।
শরণার্থী ও ৭ টি মুসলিম প্রধান দেশের অভিবাসীদের সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে শুক্রবার ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তার প্রেক্ষিতেই টার্নবুল কথা বলেন। ওবামার সময়কার সেই চুক্তির ভবিষ্যত ব্যাপারেই স্পষ্ট হতে চান তিনি। সেই চুক্তিকে এখনও সম্মান করা হবে এমন নিশ্চয়তা চান টার্নবুল। জবাবে ট্রাম্প বলেন, শরণার্থীদের গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী ‘বোস্টন বোমা হামলাকারীদের’ জায়গা দেওয়ার মতো হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাতে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ যে চারজন বিশ্ব নেতাদের সাথে ট্রাম্প কথা বলেছেন তার মধ্যে ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ’ কথোপকোথনটি শনিবার হয়েছে ট্রাম্পের। এক ঘন্টা ফোনালাপের কথা থাকলেও ২৫ মিনিট পরেই ফোন রেখে দেন ট্রাম্প।
টানর্বুল পরে এই কথোপকোথনের বিস্তারিত বর্ণনা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন এবং তা খুবই ‘আন্তরিক ও খোলাখুলি’ বলে উল্লেখ করেন। সিডনি রেডিও স্টেশনকে তিনি বলেন, ট্রাম্পের ফোন রেখে দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
এই কথোপকোথনের অফিসিয়াল সংস্করণটি ক্ষুদ্র, যেখানে উভয় নেতাই ইউএস-অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও গভীর করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন।
ওবামা প্রশাসনের সময়কার এই চুক্তিতে অস্ট্রেলিয়ান আশ্রয়প্রার্থী ১২৫০ জনকে যুক্তরাষ্ট্র পুনর্বাসন করতে পারে বলে উল্লেখ ছিলো।
শরণার্থীদের জায়গা না দেওয়ার একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে অস্ট্রেলিয়া আশ্রয়প্রার্থীদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বিপরাষ্ট্র নাউরু ও পাপুয়া নিউ গিনিতে আটকে রাখে। এই শরণার্থীদের অধিকাংশই ইরান, আফগানিস্তান ও ইরাক হতে আগত। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মায়ানমারেরও কেউ কেউ আছেন।