জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘ঈদ সালামি’র নামে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের এক কোটি টাকা শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের ভাগ করে দেওয়ার বিষয়টি ফাঁস করে বিপাকে পড়েছেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা।
ওই টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে কথা বলার পর মুঠোফোনে অপরিচিত নম্বর থেকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের গেস্টরুমে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
তার দাবি, টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নিয়ামুল হোসেন তাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লা ও যুগ্ম সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের মুঠোফোনের যোগাযোগ ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আজ আমাকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে কে বা কারা ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে। তা না হলে খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে বলেও জানানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’
একই ধরনের অভিযোগ করেছেন উপাচার্য বিরোধী একাধিক শিক্ষক। তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন শিক্ষক মুঠোফোনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন; বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির এবং আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস।
এছাড়াও ফোনালাপের সাথে জড়িত শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হামজা রহমান অন্তরের রুমে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে কারা দরজায় তালা লাগিয়ে গেছেন তিনি বলতে পারছেন না।
হামজা রহমান অন্তর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা গ্রুপের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন: ‘আমি রাতে এসে দেখি আমার রুমের তালা ভেঙে অন্য তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। রুমের কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে না।’
এমতাবস্থায় তিনি নিরাপত্তহীনতায় রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ আবদুল্লাহ হেল কাফী বলেন: ‘যারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তাদের নিরাপত্তা হল প্রশাসন নিশ্চিত করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন: ‘যারা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু তাদেরকেই নিরাপত্তা দিবে। কিন্তু যারা বর্তমান শিক্ষার্থী না, তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রশাসনের না। আর হামজা রহমান অন্তরের বিষয়টি হল প্রাধ্যক্ষ দেখছেন।’