জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং ব্যক্তিগত কোনো উপায়ে, কোনো রকম দুর্নীতি করিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে ৬ষ্ঠ দিনের মতো বক্তব্যে শেষ করেন খালেদা জিয়া। এরপর বিচারক জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ পড়ে শুনানোর পর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন তিনি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কোনো কাগজপত্র দাখিল এবং কোনো বক্তব্য রাখবেন কিনা- বিচারকের এমন প্রশ্নে খালেদা জিয়া কাগজপত্র দাখিল এবং বক্তব্য রাখবেন বলে জানান।
এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্যে তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এ মামলার সকল সাক্ষ্য ভিত্তিহীন, তদন্ত কর্মকর্তা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন, যার কোন দালিলিক প্রমাণ নেই, যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, এই মামলায় দু’জন ব্যক্তি দুটি তদন্ত করেছে। কিন্তু তদন্তের ভাষা পর্যালোচনা করলে দুটির ভাষা একই। তাতে প্রমাণ হয় এ রিপোর্টের তদন্ত সাজানো। তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ সম্পূর্ণরূপে একজন ইন্টারেস্টেড সাক্ষী। তিনি সরকারের আজ্ঞাবহ। ফলে তিনি নিরপেক্ষ কোন অনুসন্ধান করেন নি বা নিরপেক্ষ কোন তদন্তও করেননি।
“রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা উক্তি উল্লেখ করেছেন এবং জবানবন্দি দিয়েছেন। তার মিথ্যা তদন্তের সূত্র ধরেই আমার বিরুদ্ধে জনসমক্ষে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করে চলেছে সরকার।”
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের সাথে ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘অথচ এজাহারে আমার নাম এনে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলের নামে সোনালি ব্যাংক বা প্রাইম ব্যাংকের একাউন্টে আমার কোনো স্বাক্ষর নেই, কোনো চেকেও আমার স্বাক্ষর নেই। কোনো দালিলিক সাক্ষ্য কেউ উপস্থাপন করেনি।’
আগামী ৩০ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্যের জন্য পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
এর আগে স্থায়ী জামিন আবেদন করে খালেদার আইনজীবী এড. জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা ধারণা করিনি যে ম্যাডাম অসুস্থ শরীর নিয়ে এতোটা বক্তব্য রাখতে পারবেন। তবু তিনি কথা বলেছেন। কারণ তিনি আদালতের প্রতি সম্মান দেখান।
“তাই, খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন স্থায়ী করার জন্য আবেদন করছি। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। কোথাও পালিয়ে যাবেন না। ১/১১ এর সময় সেনাবাহিনী তাকে নিরাপদে দেশত্যাগের কথা বললেও তিনি যাননি। এদেশ ছাড়া তার যাবার জায়গা নেই।”
তবে খালেদার আবেদনের বিরোধীতা করে স্থায়ী জামিন না দিয়ে মামলার কার্যক্রম দ্রুত চালিয়ে নিতে আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।