অবসরে যাওয়ার পর লেখা রায় গ্রহণ করার নির্দেশনা চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি দিয়েছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেছেন, গ্রহণ করা না হলে তাঁর বেঞ্চে দেয়া সব রায় প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং দেশ বিচারিক ও সাংবিধানিক সংকটে পড়বে। সেই সাথে একটি দল এ বিষয়ে সামনের নির্বাচনে রাজনীতি করবে।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায় লেখা নিয়ে প্রধান বিচারপতির বিবৃতিরও ব্যাখ্যা দেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। রায় গ্রহণ করা না হলে ফলাফল কি হবে সে সম্পর্কেও জানান তিনি।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন তার কাছে থাকা সব রায় ইতোমধ্যেই লিখে জমা দিয়েছেন তিনি। তাই রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে রায় লেখা বাকি আছে বলে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা বিভ্রান্তিকর।
গত বছরের অক্টোবর অবসরে যান আপিল বিভাগের বিচারপতি এ এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এর পরে দ্রুত রায় লেখা এবং রায়ের নথি ফেরত দেয়ার জন্য কয়েক দফা চিঠি দেয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের রোজিষ্টার দপ্তর থেকে। পাল্টা চিঠি দেন তিনি। এ সময়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায় লেখা অসাংবিধানিক বলে বিবৃতি দেন প্রধান বিচারপতি।
এনিয়ে সর্বোচ্চ আলোচনার এক পর্যায়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী তার কাছে থাকা রায় লেখা শেষ করে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওহাব মিয়ার কাছে দেন। তিনি প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ওই রায় গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।
বলেন, আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছি এই মর্মে যে, যেহেতু আপনার এই মতবাদ সারাদেশের মহান সংসদসহ সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে। সেহেতু আপনি আমার যে প্রিজাইডিং জজ সাহেব বিচারপতি আব্দুল ওহাব মিয়া, উনাকে নতুন করে বলেন যে আবার রায়গুলো গ্রহণ করতে।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায় লেখা নিয়ে প্রধান বিচারপতির বিবৃতিরও ব্যাখ্যা দেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। বলেন, এটা প্রধান বিচারপতির নিজস্ব মতামত, আদালতের কোনো রায় নয়। এটা মানতে কেউই বাধ্য নয়। রায় হলে একটা কথা ছিলো।
রায় গ্রহণ করা না হলে ফলাফল কি হবে সে সম্পর্কেও জানান তিনি। বলেন, এমনকি যে রায়গুলোর লেখক আমি নই, অন্য দুজন। সেই রায়গুলিতেও আমার সই লাগবেই। আমার জানা মতে এমন কিছু রায় পড়ে আছে এখনো। আমি যেহেতু বেঞ্চে বসেছি তাই আমার সই ছাড়া অর্থাৎ তিন বিচারপতির সই ছাড়া কোনো রায়ই বৈধ হবে না। এইযে শত শত রায় সবগুলোই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। শুধু বিচারিক সংকট না উনি একটি সাংবিধানিক সংকটও তৈরি করে দিচ্ছেন। এটাকে কোনো রাজনৈতিক দল লুফে নিলো তাদের স্বার্থে, তারা এখন তত্ত্বাবধায়ক রায়কে অবৈধ বলছেন। এবং আমি নিশ্চিত আগামী নির্বাচনে ওরা এটা নিয়েই খেলবে।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন তার কাছে থাকা সব রায় ইতোমধ্যেই লিখে জমা দিয়েছেন তিনি। তাই রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে রায় লেখা বাকি আছে বলে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা বিভ্রান্তিকর।